এনবি নিউজ : জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেছেন, খাদ্য, জ্বালানি ও পরিবহন ভাড়া থেকে শুরু করে ইউটিলিটি বিল পর্যন্ত প্রায় সব কিছুরই উচ্চমূল্যে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ চেয়ে প্রস্তাবিত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে রবিবার (২৫ জুন) তিনি বলেন, ‘নতুন নতুন কর্মসংস্থানের বদলে কর্মহীনের সংখ্যা বাড়ছে। রাজস্ব আদায় বাড়ানো না গেলে এসব চ্যালেঞ্জ উৎরানো সম্ভব হবে না। রাজস্ব খাতে সংস্কারের পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনীতিতে বিশেষ করে ব্যালান্স অব পেমেন্ট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ১ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকার এই বাজেট উত্থাপন করেন।
রওশন এরশাদ বলেন, ‘এই বাজেট একদিকে সম্প্রসারণমূলক বাজেট, আরেক দিকে বিশাল ঘাটতির বাজেট। চলতি অর্থবছরে বাজেট বাস্তবায়নের অবস্থা ভালো নয়। আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এই জিডিপি অর্জন কঠিন হবে।’
মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য পূরণও যে ‘বড় চ্যালেঞ্জ’ হবে, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে দেশের অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়েছে। রিজার্ভে টান পড়েছে। রফতানি আয় বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এবারের বাজেট এমন এক সময় হয়েছে, যখন নানামুখী চ্যালেঞ্জ ও সমস্যায় বিশ্ব অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি। বর্তমানের মূল্যস্ফীতি গত একযুগে সর্বোচ্চ। মূল্যস্ফীতি ঠিকমতো নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ এখনই কামনা করছি।’
জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন মনে করেন, আগামী অর্থবছরে ৬টি প্রধান চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো— মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও সারে ভর্তুকির জন্য অর্থের সংস্থান করা। বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ব্যবহার এবং সরকারের উচ্চ-অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন। ভ্যাট সংগ্রহের লক্ষ্য পূরণ এবং ব্যক্তি আয়করদাতার সংখ্যা বাড়ানো। টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা।
সরকারকে এ চ্যালেঞ্জগুলো গুরুত্ব সহকারে দেখার পরামর্শ দেন বিরোধী দলীয় নেতা।
এ টি