এনবি নিউজ : যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি এবং তিব্বত ইস্যু বিষয়ক মার্কিন বিশেষ সমন্বয়কারী উজরা জেয়া বাংলাদেশে সফরের ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার (৮ জুলাই) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, শ্রম সমস্যা, মানবাধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবপাচারের বিরুদ্ধে লড়াইসহ মানবিক উদ্বেগ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ঢাকায় আসার আগে তিনি এখন ভারত সফর করছেন।
এ বিষয়ে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভাগাভাগি করা সমাধান এগিয়ে নিতে আগামী সপ্তাহের ভারত ও বাংলাদেশে ভ্রমণের উদ্দেশ্য হবে আরও উন্মুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য অবদান রাখা এবং সমগ্র অঞ্চলজুড়ে উদ্বাস্তু ও স্বাগতিক সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক সহায়তা জোরদার করা।’
ভারত সফরকালে দুই দেশের অংশীদারত্বকে গভীরতর ও স্থায়ী করার বিষয়ে আলোচনা করতে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন উজরা জেয়া। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, গণতন্ত্র, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও মানবিক ত্রাণ বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
এছাড়া আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর সঙ্গে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রান্তিক ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুসহ নারী ও মেয়ে, প্রতিবন্ধী এবং দুর্বল সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আলোচনা করবেন।
গত বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন উজরা জেয়া। এ সময় তারা ‘ফলপ্রসূ’ আলোচনা করেন।
পরে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি এক টুইটে বলেন, ‘ধন্যবাদ, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান—গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায্য শ্রম চর্চা ও মানবিক সহযোগিতার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য। আমি আমাদের শক্তিশালী অংশীদারত্ব আরও গভীর করার জন্য উন্মুখ।’
আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া আগামী ১১ থেকে ১৪ জুলাই ঢাকা সফরে মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর জন্য মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর উপসহকারী প্রশাসক অঞ্জলি কৌর প্রতিনিধিদলে থাকবেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, ‘জেয়া তুলনামূলকভাবে একজন উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্মকর্তা এবং তার এলাকাও বেশ প্রশস্ত। উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরে পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয় ছাড়াও বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আলোচনায় আসতে পারে।’
ঢাকা সম্প্রতি ওয়াশিংটন থেকে একাধিক কর্মকর্তার সফরের সাক্ষী হয়েছে, যার মধ্যে ২০২২ সালের ১৯ থেকে ২৩ মার্চ রাজনৈতিকবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ডের একটি সফরও রয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতে ডোনাল্ড লুও বাংলাদেশ সফর করেন। লু সাম্প্রতিক অতীতে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ নীতি নির্ধারণে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন।
গত ২৫ মে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করার পর লু মার্কিন মুখপাত্র হিসেবে উপস্থিত হন এবং বাংলাদেশি মিডিয়াতে উপস্থিত হয়ে কীভাবে এটি (ভিসা নীতি) বাস্তবায়িত হবে তা ব্যাখ্যা করেন।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি উইংয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘উজরা জেয়ার নেতৃত্বে মার্কিন প্রতিনিধি দলের এই সফর মূলত দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা এবং যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করার।’
মার্কিন প্রতিনিধিদল বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার পাশাপাশি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।