এনবি নিউজ : আদালত অবমাননায় সাজা ভোগ করা দিনাজপুরের পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিতের যে সিদ্ধান্ত হাই কোর্ট দিয়েছিল, তা আপিল বিভাগে আটকে গেছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদেন শুনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারকের আপিল বেঞ্চ হাই কোর্টের ওই আদেশ ছয় সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে।
এর ফলে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়রের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশেই বহাল থাকল।
আপিল আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। জাহাঙ্গীরের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
জাহাঙ্গীর আলমের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর বেঞ্চ মঙ্গলবার মেয়র পদ থেকে তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে দিয়েছিল
সেইসঙ্গে তাকে বরখাস্তের আদেশ কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছিল আদালত। রুল শুনানির জন্য আগামী ৩ ডিসেম্বর দিন রাখা হয়েছে।
কেন বরখাস্ত?
ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদের মালিক হওয়ার মামলায় গত ২ অগাস্ট বিএনপি চেয়ার পারসন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেয় ঢাকার একটি আদালত।
ওই রায়ের পর দিনাজপুর বিএনপি কার্যালয়ে দলের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সভা করেন। ওই সমাবেশে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম সুপ্রিম কোর্টের এক বিচারপতিকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সমিতির সদস্য শফিক রায়হান শাওন ও মাহফুজুর রহমান রোমানসহ চার আইনজীবী। সেই প্রেক্ষিতে গত ১৭ অগাস্ট জাহাঙ্গীর আলমকে তলব করে আপিল বিভাগ।
এরপর ২৪ অগাস্ট তিনি আপিল বিভাগে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন।
শুনানির পর আদালত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি না দিয়ে শুনানির জন্য ১২ অক্টোবর দিন ধার্য করে আপিল বিভাগ।
১২ অক্টোবর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ জাহাঙ্গীর আলমকে এক মাসের কারাদণ্ড দেয়, সেই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে দিনাজপুরের আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
সে অনুযায়ী জাহাঙ্গীর দিনাজপুরের আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠায়। কারাগারে থাকা অবস্থায় গত ৩১ অক্টোবর তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এক মাস কারাভোগ করে সম্প্রতি তিনি বের হন এবং গত সোমবার বরখাস্তের আদেশের বিরুদ্ধে রিট আবেদন করেন। হাই কোর্ট তার পক্ষে আদেশ দিলেও তা আপিল বিভাগে স্থগিত হয়ে গেল।