• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

এক বছরে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ

Avatar
সেন্ট্রাল ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ৩০ মে, ২০২১ সংবাদটির পাঠক ১ জন

এনবি নিউজ : করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে পণ্যের দাম ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। চাল থেকে শুরু করে, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা, পেঁয়াজ, মুরগির মাংস, ডিম, চিনি, লবণসহ বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে হু হু করে। খোদ সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পণ্যমূল্য তালিকায় এ চিত্র উঠে এসেছে। সংস্থাটি তথ্যমতে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায়ও বর্তমানে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি পণ্যে ভোক্তাকে ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় করোনাকালে আয় কমায় ও ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তারা দিশেহারা। এতে সবচেয়ে বেশি হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন আয় ও খেটে খাওয়া মানুষ।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে সরু চাল কেজিতে ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ দাম বেড়েছে। মাঝারি আকারের চাল কেজিতে ১১ দশমিক ৫৮ শতাংশ ও মোটা চাল কেজিতে ৮ দশমিক ১৪ শতাংশ দাম বেড়েছে। প্রতি কেজি খোলা আটার দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। বছর ব্যবধানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৩৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ, প্রতি লিটার বোতালজাত সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং লুজ পাম অয়েলের দাম বেড়েছে লিটারে ৭৫ শতাংশ। প্রতি কেজি মুগ ডাল বছরের ব্যবধানে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি দরে। দেশি হলুদ ২৫ শতাংশ, চিনি ১৬ শতাংশ, প্যাকেটজাত লবণ ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর দেশি মুরগি প্রতি কেজিতে ২ দশমিক ১১ ও প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিমের দাম বছরের ব্যবধানে ১৯ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়েছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, করোনাকালে দেশের মানুষের আয় কমেছে। কিন্তু নিত্যপণ্য কিনতে বেশি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। তাই পণ্যের দাম যাতে সহনীয় থাকে এ ব্যাপারে সরকারকে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। অনেক পণ্য আছে যেগুলো দেশে উৎপাদন হয়। আবার অনেক পণ্য আমদানি করতে হয়। সেক্ষেত্রে যেসব দেশ থেকে পণ্য আসে সেসব দেশে দাম বাড়লে আমাদের দেশেও বাড়বে। এটাই স্বাভাবিক। তাই আমদানি করা নিত্যপণ্যের ওপর সব ধরনের শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করলে পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে। তিনি আরও বলেন, করোনাকালে দেশের মানুষ অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। অনেকেরই আয় কমেছে। নতুন করে কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না। তাই এসব দিকে সরকারের খেয়াল রাখা দরকার। মানুষের আয় কিভাবে বাড়বে সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করতে হবে। কারণ আয় থাকলে পণ্যের দাম বাড়লেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তাই ক্যাবের মাধ্যমে তদারকি কার্যক্রম বৃদ্ধির পাশাপাশি আসন্ন বাজেটে আমদানি করা সব নিত্যপণ্যের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি অর্থমন্ত্রীকে। এতে করে দেশে পণ্যের দাম কিছুটা হলেও কমবে।

টিসিবির তথ্যমতে, শুক্রবার প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকায়, গত বছর একই সময় ছিল ৩৫ টাকা। প্রতি কেজি মাঝারি আকারের চাল ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি সরু চাল সর্বনিম্ন বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা, গত বছর ছিল ৫৫ টাকা। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলে ৩৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৬ টাকায়। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। পাম অয়েল লুজ প্রতি লিটারে ৪৯ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৪ টাকা। প্রতি কেজি মুগ ডাল বছরের ব্যবধানে ১০ টাকা বেড়ে ১১০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা। দেশি হলুদ কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা। পাশাপাশি প্রতি কেজি প্যাকেটজাত লবণ ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। এছাড়া বছরের ব্যবধানে দেশি মুরগি কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা। ফার্মের ডিম প্রতি হালিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা।

রাজধানীর নয়াবাজারে শুক্রবার নিত্যপণ্য কিনতে আসা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। কোনো পণ্য চাহিদামতো কেনার সামর্থ্য নেই। তবে খেয়ে বাঁচতে হবে, তাই যেসব নিত্যপণ্য দরকার তা কমিয়ে হলেও কিনে বাড়ি ফিরছি। আমাদের মতো মধ্যবিত্তের কষ্ট দেখার কেউ নেই। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা ভ্যান চালক মো. সহিদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, সরকার আমাদের মতো গরিবের খবর নেয় না। খবর নিবে বড় বড় ব্যবসায়ীদের।

এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরের মার্চে ২৭৭ টাকা দিয়ে যে পরিমাণ পণ্য ও সেবা পাওয়া যেত, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সেই পরিমাণ পণ্য ও সেবা নিতে ব্যয় করতে হয়েছে ২৯২ টাকা। আলোচ্য এই সময়ে পণ্য ও সেবা কিনতে ১৫ টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে। সেক্ষেত্রে শতকরা হিসাবে ব্যয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ওই সময় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। গত বছরের মার্চে ৩০১ টাকা দিয়ে যে পরিমাণ খাদ্যপণ্য পাওয়া যেত, একই পণ্য কিনতে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩১৮ টাকা। আলোচ্য সময়ে বেশি ব্যয় হয়েছে ১৭ টাকা। সেক্ষেত্রে শতকরা হিসাবে ব্যয় বেড়েছে ৫ দশমিক ৫১ শতাংশ।

এ টি


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  

নামাজের সময় সূচি

    Dhaka, Bangladesh
    শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
    ওয়াক্তসময়
    সুবহে সাদিকভোর ৫:০০ পূর্বাহ্ণ
    সূর্যোদয়ভোর ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ
    যোহরদুপুর ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
    আছরবিকাল ২:৫০ অপরাহ্ণ
    মাগরিবসন্ধ্যা ৫:১১ অপরাহ্ণ
    এশা রাত ৬:৩০ অপরাহ্ণ
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!