পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক ব্রিফিংয়ে বলেন, চীনের উপহারের ছয় লাখ ডোজ টিকা আনতে দুটি সি-১৩০ প্লেন পাঠানো হচ্ছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি আওয়ামী লীগকে বিভিন্ন ধরনের মেডিকেল ইকুইপমেন্ট দিচ্ছে। টিকা নেওয়ার পর প্লেনে যত জায়গা থাকবে, সেটি পুরোটা ভরে নিয়ে আসবে।
সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আজ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, চীনের উপহারের টিকা আনতে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পরিবহন বিমান ১৩ জুন সকালে বেইজিং যাবে। উপহারের টিকা আর চিকিৎসাসামগ্রী নিয়ে বিমানবাহিনীর পরিবহন বিমান এদিন বিকেলে ঢাকায় ফিরে আসবে।
চীন গত ১২ মে সিনোফার্মের তৈরি পাঁচ লাখ উপহারের টিকা বাংলাদেশে পাঠায়। তার ৯ দিনের মাথায় চীন দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশকে টিকা উপহার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
গত ২১ মে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর ফোনালাপ হয়। এই ফোনালাপের সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশকে দ্বিতীয় দফায় ছয় লাখ টিকা উপহার দেওয়ার কথা জানান।
মোমেন-ওয়াং ফোনালাপের পর ঢাকায় চীনের দূতাবাস থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণের ওপর চীনের নজর রয়েছে। বাংলাদেশে জরুরি ভিত্তিতে টিকার বিপুল চাহিদার প্রেক্ষাপটে সরবরাহের ঘাটতির বিষয়ে চীন উদ্বিগ্ন। ফলে দ্বিতীয় দফায় টিকা উপহারের ঘোষণা বাংলাদেশের প্রতি চীনের বন্ধুত্বের নিদর্শন। অন্যদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চীনের করোনাভাইরাসের টিকার নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ অব্যাহত রাখতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং।
চীনের সিনোফার্ম থেকে দেড় কোটি টিকা কেনার পাশাপাশি রাশিয়া থেকে এক কোটি টিকা কিনতে সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, চীনের সিনোফার্ম থেকে দেড় কোটি টিকা কেনার চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছিল বাংলাদেশ। মে মাসের শেষ সপ্তাহে সরকারের এক অতিরিক্ত সচিব সাংবাদিকদের কাছে সিনোফার্মের টিকার দাম বলে দেন। এতে সিনোফার্ম থেকে জুন মাসে টিকার প্রথম চালান নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশের চেয়ে বেশি দামে কিনেছে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ এ বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশও করেছে।