এনবি নিউজ : আসছে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না করলে ১ ডিসেম্বর থেকে ধর্মঘটে যাবে রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ। রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব গতকাল এক সভায় লিখিত ভাবে এই ঘোষণা দেন।
বিএনপির সমাবেশের আগে এবার রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় ধর্মঘট ডাকার কথা বলেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। এজন্য তারা কয়েকটি দাবি বাস্তবায়নের জন্য ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করাসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না করলে ডিসেম্বরের প্রথম দিন থেকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় পরিবহন ধর্মঘটে যাবে বলেছে রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ।
শনিবার নাটোর শহরের কানাইখালীতে একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিভাগীয় মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের যৌথ সভায় এ ঘোষণা আসে; পরে বিকাল ৪টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা তা সাংবাদিকদের জানান।আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ হওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। বিএনপি বলছে, তাদের কর্মসূচিতে বাধাগ্রস্ত করতে এই পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হচ্ছে। নাটোর জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির ব্যবস্থাপনায় এই সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব।
তিনি সভায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের মিটিং যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সমষ্টিগত সমস্যার কারণে। এখানের দাবি ও দফাগুলো সরকারের কাছে। আমাদের এটি ব্যবসায়িক দাবি, রাজনীতির সাথে এ দাবির কোনো সম্পৃক্ততা নাই।”তাদের ১১ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সড়ক ও মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকসাসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধ, জ্বালানি তেল, ও যন্ত্রাংশের মূল্যহ্রাস, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধান।
সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব বলেন, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তাদের এই ১১ দফা বাস্তবায়ন না করলে ১ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট শুরু হবে।সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ ওই সভায় প্রধান অতিথি জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজানসহ বগুড়া বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, পাবনা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক মোমিন, সিরাজগঞ্জ বাস কোচ মালিক সমিতির সভাপতি আতিকুল ইসলাম আতিক, চাপাঁইনবাবগঞ্জ মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম সেন্টু, নাটোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কামরুল ইসলাম, বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি লক্ষ্মণ পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান এবং রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, পরিবহন ধর্মঘট ডেকে সমাবেশ ব্যর্থ করতে পারবে না বলে মনে করেন বিএনপির রাজশাহীর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।তিনি বলেন, “এ ধর্মঘটের মধ্যে দিয়ে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক পরিষদ জনগণের সাথে বিরোধিতা করল। তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হলো না। তারা যতই ধর্মঘট ডাকুক, সমাবেশ শুধু সফল হবে না, ব্যাপকভাবে সফল হবে।”
বিএনপির সাংগঠনিক বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে আসছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন।ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর [সাংগঠনিক বিভাগ], সিলেট ও কুমিল্লায় [সাংগঠনিক বিভাগ] সমাবেশ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ ও কুমিল্লার সমবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট হয়নি। তবে ময়মনসিংহের সমাবেশের সময় বাস চলাচল করেনি।বাকি রয়েছে রাজশাহী ও ঢাকার সমাবেশ। ঢাকায় বিএনপির এই সমাবেশ ডাকা হয়েছে আগামী ১০ ডিসেম্বর।