জাতীয় এইচআইভি/এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৬৭ জন পুরুষ সমকামীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে শনাক্ত ছিল ৯ শতাংশ। কর্মকর্তারা বলেছেন, ২০২১ সালের নভেম্বরের পর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত পরীক্ষায় শনাক্তের হার আরও বেশি। এটি উদ্বেগজনক প্রবণতা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিরায় মাদকগ্রহণকারীরা নিজেদের মধ্যে সুই ভাগাভাগি করেন। এ কারণে তাঁদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। তবে সমকামী পুরুষের মধ্যে কেন সংক্রমণ বেশি, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য ও ভাইরাসবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সমাজে পুরুষ সমকামীরা নিজেদের প্রকাশ করেন না। তাই তাঁদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া কঠিন। তাঁদের মধ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ জানতে গভীর অনুসন্ধান দরকার।’
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব থেকে এইচআইভি/এইডস নির্মূলের কথা বলা হয়েছে। এটি অর্জনের জন্য ৯৫-৯৫-৯৫ নামের একটি কৌশল ঠিক করা হয়। অর্থাৎ অনুমিত এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির ৯৫ শতাংশকে শনাক্ত করতে হবে। শনাক্ত ব্যক্তিদের ৯৫ শতাংশকে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া কাগজপত্রের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির অনুমিত সংখ্যা ১৪ হাজার। ইতিমধ্যে ৬৩ শতাংশ শনাক্ত হয়েছে। দেশের সব জেলায় এইচআইভি পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে ২৩টি জেলায় এ পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে।
আমাদের সমাজে পুরুষ সমকামীরা নিজেদের প্রকাশ করেন না। তাই তাঁদের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া কঠিন। তাঁদের মধ্যে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ জানতে গভীর অনুসন্ধান দরকার বলে জানালেন, বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য ও ভাইরাসবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।
ইতিমধ্যে দেশে শনাক্ত ব্যক্তিদের ৭৬ শতাংশ চিকিৎসার আওতায় এসেছে। অন্যদিকে চিকিৎসার মধ্যে থাকা ৯৩ শতাংশ রোগীর ভাইরাসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আছে। এই দুটি ক্ষেত্রে অর্জন সন্তোষজনক।
১৯৮৯ সালে দেশে প্রথম এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। গত বছর ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে ৮ হাজার ৭৩২ জন সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। তাঁদের মধ্যে ২০৫ জন মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব এইডস দিবসে দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে নতুন তথ্য দেওয়ার কথা রয়েছে।