এনবি নিউজ : লোডশেডিং বন্ধ, বিদ্যুৎ সংকট সমাধান, খাদ্যপণ্যের দাম কমিয়ে মানুষের জীবন বাঁচানোর দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ সময় পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় বিক্ষোভ মিছিলটি। সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে জিরো পয়েন্ট মোড়ে তাদের বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ।
এর আগে, সকাল সাড়ে ১১টা থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মীরা। সেখানে তারা মিছিল পূর্ব প্রাথমিক বক্তব্য রাখেন। পরে ১টা ১৫ মিনিটের দিকে তারা সচিবালয় অভিমুখে মিছিল নিয়ে রওনা হন। মিছিলটি প্রেস ক্লাব থেকে পল্টন মোড় হয়ে জিরো পয়েন্ট মোড়ে গেলে পুলিশ বাধা দেয়।
মিছিল পূর্ব সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
সমাবেশে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এ বছর বাংলাদেশের যত মুদ্রার ঘাটতি দেখা গেছে তা গত কয়েক বছরে হয়নি। এই সরকারের কাছে বাংলাদেশের জনগণ বিদ্যুৎ পাবে না, নিরাপত্তা পাবেন না, ভোট দিতে পারবেন না। সরকারের যাওয়ার সময় হয়েছে। এই সরকার স্বৈরাচারী, লুটপাটের সরকার। এই সরকার আগে আমাদের ভয় দেখাতো। জনগণকে বিভ্রান্ত করার নানা কায়দা দেখাতো। এ জন্য আমরা বলি, আপনাদের সময় হয়েছে এবার যান।’
আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘এ দেশের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। জনগণের স্বার্থে মানুষের স্বার্থে এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এই সরকারকে আগে পদত্যাগ করতে হবে। এই মুহূর্তে দরকার, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই।’
মিছিলে বাধা দেওয়ায় গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মীরা পুলিশের বেরিকেট ভেঙে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। সেখানে এক দফা ধস্তাধস্তিও হয়। পরে এই সংগঠনের কর্মীরা আব্দুল গনি রোডের জিরো পয়েন্ট মোড়ে সমাবেশ শুরু করেন।
ওই সমাবেশ থেকে জিরো পয়েন্ট মোড়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা আজ এখানে যে কর্মসূচি করলাম এই কর্মসূচি আমাদের একটা টেস্ট রিহার্সেল। আপনারা শুনে রাখুন আজ আমরা এখানে বিক্ষোভ করছি, এরপর ঘেরাও হবে। পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এই সচিবালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, রাষ্ট্র ও পুলিশ প্রশাসনকে ঘেরাও করে বাংলাদেশের মানুষ দাবি আদায় করবে। আপনারা প্রস্তুত থাকুন, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন, ঘরে ঘরে বার্তা পৌঁছে দিন। জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ যেভাবে বাধা দিয়েছে তার নিন্দা জানাই। পুলিশের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা আপদের দায়িত্ব পালন করুন। অবৈধ সরকারের সহযোগী হিসেবে দেশের মানুষ আপনাদের দেখতে চায় না। গত ১৫ বছরে আপনারা জনগণের বিরুদ্ধে যে অপরাধ করেছেন তার তালিকা হয়েছে, প্রত্যেকের অপরাধের হিসাব নেওয়া হবে। এই সরকারের পৃথিবী ছোট হয়ে আসছে। এই ঈদের পর আরেকটা ঈদ এই সরকার দেখতে পাবে না।’
কর্মসূচি ঘোষণা করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘আগামী ১৯ থেকে ২১ জুলাই গণতন্ত্র মঞ্চ ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখ রোড মার্চ করবে।’
মিছিলে বাধা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের এডিসি শাহেন শাহ বলেন, ‘সচিবালয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। এখানে হুট করেই কেউ মিছিল নিয়ে আসতে পারে না বা এর সামনে কেউ সমাবেশ করতে পারে না। তাই গণতন্ত্র মঞ্চের মিছিল নিয়ে এখানে আসার সুযোগ নেই। এ কারণেই মিছিলে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমরা ধৈর্যের সঙ্গে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করেছি। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে আমাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।’
এ টি