• শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন

হাসপাতালের মেঝেও ঠাসা ডেঙ্গু রোগীতে; হিমশিম অবস্থা

Avatar
সেন্ট্রাল ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ৯ জুলাই, ২০২৩ সংবাদটির পাঠক ১ জন

আসাদুজ্জামান তপন : “৮ তলায় ভর্তি, রাইতে ওইখানেই ছিলাম। সকালে ডাক্তার আইসা ৮টা পরীক্ষা দিছে। সেই পরীক্ষা করতে নিচে নামছিলাম। কিন্তু এত ভিড় যে লিফটে ওঠার সময় আমার মাইয়াটা আরও অসুস্থ হইয়া যায়। ওদেরকে এত কইলাম যে আমার মাইয়াটা অসুস্থ, আমার মাইয়ার রুহুটা যায়, উপরে যাইতে দেয় নাই ওরা।”

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আমেনা আক্তার লামিয়ার চিকিৎসা নিয়ে এভাবেই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছিলেন মা আলমতাজ বেগম।

জ্বর, গা ব্যথা আর পেট ফোলাভাব থাকায় শুক্রবার রাতে মেয়েকে এনে মুগদা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েছেন, বলে জানালেন তিনি।

হাসপাতালে এসেও যে স্বস্তির দম ফেলতে পারছেন তা নয়। সেখানকার পরিবেশে এক রাত থেকে তিনি নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জানিয়ে বলেন, “৮ তলায় বাথরুমের কাছে ফ্লোরে একটা সিট দিছে। কিন্তু সেখানে এত গন্ধ যে আমার নিজের পেট খারাপ হইয়া গেছে।

“দুর্গন্ধে রাইত থেকে মেয়ে কিছু খাইতে পারতেছে না। তাছাড়া ওখানে মশা আছে, সারারাত মশা কামড়াইছে।”

গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উদ্বিগ্ন এ মায়ের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন হাসপাতালের মেঝেতে প্রায় অচেতন হয়ে পড়েছিলেন লামিয়া। ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে ভর্তি হওয়া মানিকনগরের এই রোগীকে দেওয়া হচ্ছিল স্যালাইন। পাশ থেকে হাতপাখা দিয়ে মা বাতাস করছিলেন আর ভালো আসনের জন্য বিলাপ করছিলেন।

শুধু ওয়ার্ডের মেঝেই নয়, হাসপাতালটির বারান্দা, বাথরুম সংলগ্ন জায়গাও এখন রোগীতে ঠাসা। রোগী আর স্বজনদের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা পাওয়া ভার। মেঝের আনাচে-কানাচেও ম্যাট্রেস বিছানো, একেকটা ম্যাট্রেসে দুইজন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ঢাকায় সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী সামাল দেওয়া মুগদা হাসপাতালে সপ্তার ব্যবধানে রোগী বেড়েছে দ্বিগুণ।

গত ১ জুলাই সেখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ৬০ জন, সেদিন চিকিৎসাধীন মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ২৩২ জন। এক সপ্তাহ বাদে শনিবার সেখানে ভর্তি হয়েছে ১১১ জন আর চিকিৎসাধীন মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪৩৬।

<div class="paragraphs"><p>ঢাকার মুগদা হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের একাংশ</p></div>

ঢাকার মুগদা হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডের একাংশ

রোগীদের অসন্তোষ আর অভিযোগের কথা মেনেও হাসপাতালটির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. নিয়াতুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, তারা একসঙ্গে ৮০০ ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামাল দিতে পারবেন। তবে দরকার আরও জনবলের।

তারিখ ২৪ ঘণ্টায় রোগী ভর্তি চিকিৎসাধীন মোট রোগী
১ জুলাই ৬০ ২৩২
২ জুলাই ৮৪ ২৫১
৩ জুলাই ৮৯ ২৪০
৪ জুলাই ১৩১ ২৮৮
৫ জুলাই ১১৩ ৩৩১
৬ জুলাই ১১১ ৩৫৭
৭ জুলাই ১২৭ ৩৪৭
৮ জুলাই ১১১ ৪৩৬

সূত্র: মুগদা হাসপাতাল

দুশ্চিন্তায় মায়েরা, সেবা নিয়ে অসন্তোষ

২০১৪ সালে স্বামীবিয়োগের পর পোশাক কারখানায় চাকরি করে সংসার চালান আলমতাজ, টানাপড়েনের মধ্যেও পড়ালেখা করাচ্ছেন মেয়েকে।

“উনি মারা যাওয়ার পর আর বিয়েশাদি করি নাই। মাইয়াটারে নিয়া থাকি, নিজে চাকরি কইরা মাইয়ারে ইন্টারে পড়াইতেছি। আগামী মাসে ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু আমার মাইয়া তো কাহিল। দেখার কেউ নাই।”

মেয়েকে একা রেখে হাসপাতালের বিভিন্ন তলায় আসা-যাওয়া করতে করতে কাহিল দশা আলমতাজ বেগমের। তা দেখে সহায়তা করছিলেন মানিকনগর এলাকার আরেক বাসিন্দা নাইম, যিনি নিজেও তার এক ডেঙ্গু আক্রান্ত আত্মীয়কে নিয়ে তিন দিন ধরে এই হাসপাতালে রয়েছেন।

নাঈম বললেন, “আমি শুরু থেকেই তাদের সাথে আছি, কারণ উনারা কিছু বুঝতে পারছে না কোথায় যাবে, কী করবে। ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারি না, বললেও তারা আমাদের কথাকে গুরুত্ব দেয় না। ডাক্তার মন চাইলে আসে, না মন চাইলে আসে না।”

নার্সদের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নাঈম। তার কথায়, “ডাক্তার যদিও একটু কথা শোনে, নার্সদের সাথে তো কথাই বলা যায় না। কথা বললেই ঝাড়ি মারে। আমরা পরিস্থিতির শিকার। সরকারি হাসপাতাল, কিছু বলতেও পারি না।”

রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বললে সবাই কোনও না কোনও অভিযোগ তুলছিলেন।

এরমধ্যেই আট তলার শিশু ওয়ার্ডের অবস্থায় বেশি শোচনীয় দেখা গেল। সেখানে আড়াই বছরের শিশু ওয়াফিয়াকে নিয়ে আছেন মাহমুদা। তিনি জানান, তাদের বাসা খিলগাঁওয়ে। গত পরশু বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি করান তার মেয়েকে। ছেড়ে ছেড়ে জ্বর ছিল, সঙ্গে বমি। আসার পর থেকে স্যালাইন চলছে।

মেয়ের সুস্থতা নিয়ে শঙ্কা আর উদ্বেগের মধ্যে তার অভিযোগ, “আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ। আমাদের টাকা নাই, থাকলে মেয়েকে প্রাইভেটে ভর্তি করাইতাম। কারণ এই পরিবেশে থাকা মানে আরও অসুস্থ হয়ে পড়া।”

রোগীদের অসন্তোষের কথা মানছেন হাসপাতাল পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামানও। যে বাস্তবতার মধ্য দিয়ে দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে তা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “এখন আমার রোগী দ্বিগুণ হয়ে গেছে। কিন্তু আমায় সেই অনুযায়ী বরাদ্দ তো দেওয়া হয় নাই। যেখানে ১৪৫ জন রোগী, সেখানে অন্তত ১০ জন নার্স দেওয়া দরকার।

“কিন্তু আমি দিতে পারছি পাঁচজন। তাহলে একেকজন নার্সের ভাগ্যে পড়ছে ৩০ জন করে রোগী। যে নার্স ৩০ জন রোগী দেখছেন, উনি তো ৬০ মিনিটের আগে কারও কাছেই যেতে পারবেন না।”

মশারি টানাতে অনীহা

হাসপাতালের পরিবেশ, সেবামান, চিকিৎসক নিয়ে রোগীদের অভিযোগ পাওয়া গেলেও মশারি টানানোর প্রশ্নে স্বজনদের তেমন আগ্রহই দেখা যায়নি।

শনিবার হাসপাতালের নারী, শিশু ও পুরুষ- তিন ওয়ার্ডে গিয়েই প্রায় সব রোগীকে মশারি ছাড়াই দেখা গেছে।

<div class="paragraphs"><p>ঢাকার মুগদা হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী</p></div>

ঢাকার মুগদা হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী

ডেঙ্গু আক্রান্তদের বেলায় মশারি টানানো বাধ্যতামূলক, এর পরও কেন তা মানছেন না-এমন প্রশ্নে বেশির ভাগ স্বজনই বললেন, মশারি টানালে এর ভেতর দিয়ে বাতাস গিয়ে রোগীর গায়ে লাগে না।

মেঝের রোগীদের স্বজনদের কেউ কেউ বলেন, হাসপাতাল মশারি দিলেও তা টানানোর জায়গা নাই।

ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু ওয়াফিয়ার মা মাহমুদা বলেন, “তারা মশারি দিছে। কিন্তু দেখেন, টানানোর জায়গা নাই। তাছাড়া এই বিছানায় দুইজন বাচ্চা।

“এতগুলা মানুষ আমরা। কিভাবে কী করব? সেজন্য বাতাস করছি- যাতে মশা না আসে।”

মানিকনগরের মাণ্ডা এলাকা থেকে শিশু মুবাশ্বির হাসান রাইফাকে নিয়ে ক’দিন ধরে হাসপাতালে থাকছেন মা রাহেলা। তিনি বলছিলেন, “আজকে ৬ দিন ধরে জ্বর। ঈদের পরদিন থেকে থেমে থেমে জ্বর আসতেছিল। দুইদিন আগে রাত ২টায় এসে ভর্তি করছি। কারণ প্লাটিলেট কমে যাচ্ছিল।

“ভর্তির সময় রাইফার প্লাটিলেট ৮১ হাজার থাকলেও এখন তা বেড়ে হয়েছে ৯১ হাজার। মশারি দিই নাই, মশারি দিলে ঘেমে যায় ও।”

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বলেন, “মশারি সবার কাছে আছে, কেউ কিন্তু বলবে না যে মশারি নাই। সমস্যা হল, আমি রোগীকে মশারি টানিয়ে দিলাম। দেখা গেল যে আমি চলে আসার ১০ মিনিট পরই রোগী সেই মশারি খুলে ফেলল। রোগীরা এটা করছে, কারণ সে চায় তার বাচ্চার সর্বোচ্চ কমফোর্ট।

“মায়েদের কথা হল, প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরমে বাচ্চাগুলা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আসলে এসময় রোগীর শরীরে একটা বার্নিং ফিলিংস হয়। সেজন্য মাথার ওপর ফ্যান ঘুরছে, কিন্তু তার পরও তার গরম কমছে না। দেখা যায়, সে সাইডেও ফ্যান লাগাচ্ছে। যদিও আমরা শর্ট সার্কিটের ভয়ে সেটা রেস্ট্রিক্ট করেছি। কারণ এতগুলা ফোম, যদি একটা ফোমে আগুন লেগে যায়, কাউকে সার্ভাইভ করানো যাবে না।”

রোগীদের ২৫ শতাংশই শিশু 

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নিয়াতুজ্জামান জানান, গত ২ সপ্তাহে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর প্রায় ২৫ শতাংশই শিশু।

“আজকের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ণ বয়স্ক ডেঙ্গু রোগী হল ৩৪১ জন, শিশু ৯৫ জন। এদের মাঝে আড়াই মাস বয়সী শিশুও আসছে।”

অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, “ডেঙ্গুর কিছু অস্বাভাবিক উপসর্গ আছে যা মায়েরা বুঝতে পারেন না। সেজন্য শিশুদের ঝুঁকি বেশি। এসময় হাত-পা, পেট ফুলে যেতে পারে। প্রচুর পরিমাণ পেটে ব্যাথা, বমি, পাতলা পায়খানা হতে পারে।

<div class="paragraphs"><p>ঢাকার মুগদা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ডেঙ্গু রোগী</p></div>

ঢাকার মুগদা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ডেঙ্গু রোগী

“তাছাড়া কারও কারও খিঁচুনিও আসতে পারে। আজকাল প্রচুর শিশু আসছে ডায়রিয়া নিয়ে। কিন্তু দেখা যায় যে সেটা ডেঙ্গুর জন্য। মায়েরাও কনফিউজড হয়ে যাচ্ছেন যে আমার শিশুটা আদৌ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত কি না। কারণ উনি জানেই না যে এই উপসর্গ থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে। উনি নির্দিষ্ট কিছু উপসর্গের কথা জানেন।”

রোববার স্কুল খুললে শিশুদের ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে শঙ্কার কথা জানালেন মুগদা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নিয়াতুজ্জামান। তিনি বলেন, “এ থেকে রক্ষা পেতে বাচ্চাদের শরীর ঢেকে রাখবে- এমন পোশাক পরাতে হবে। স্কুলের চারপাশ, আঙ্গিনা পরিষ্কার করতে হবে।

“এই বাচ্চারা স্কুলে প্রায় ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা থাকবে, তখন যেন তাদেরকে মশা না কামড়াতে পারে। এটা নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে স্কুল হবে সংক্রমণের একটা বড় জায়গা। আর একসাথে এতগুলো বাচ্চা যদি আক্রান্ত, মুশকিল হয়ে যাবে সামাল দেওয়া।”

দরকার আরও চিকিৎসক-নার্স

এবার বর্ষা মওসুম শুরুর আগে থেকেই এইডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় এই বছরের রেকর্ড সংখ্যক ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শনিবার জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৮২০ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে গেছেন; তার মধ্যে ৬০৩ জনই ঢাকায় এবং ২১৭ জন ঢাকার বাইরের। এ নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। অন্যদিকে এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে একই সময়ে দুজন মারা গেছেন। তাদের নিয়ে ডেঙ্গুতে এ বছর মৃত্যু হয়েছে ৬৭ জনের।

গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বর্ষা পূর্ববর্তী জরিপের তথ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ঢাকার ১১৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫৫টিতে ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এইডিস মশার ঝুকিপূর্ণ উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এ অবস্থায় ঢাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি থেকে শনিবার পর্যন্ত ঢাকার সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ২০টি হাসপাতালে মোট ৫ হাজার ৭৫৪ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে, যার মধ্যে কেবল মুগদা হাসপাতালেই অর্ধেক (২৬৪৭) রোগী ভর্তি হয়। এসব হাসপাতালে মারা গেছেন মোট ৪০ জন ডেঙ্গু রোগী, যার মধ্যে ২০ জন মুগদার রোগী। আবার বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীও সবচেয়ে বেশি এই হাসপাতালে।

এমন পরিস্থিতিতে আরও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসার ও নার্স চাইছে এ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীও তা অনুধাবন করে গত ১৯ জুন ডিও লেটার (আধা সরকারিপত্র) পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে। এতে ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ২০ জন মেডিকেল অফিসার ও ৫০ জন সিনিয়র স্টাফ জরুরি ভিত্তিতে পদায়নের অনুরোধ জানানো হয়।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক বলেন, “আমার সিট আছে ৫০০। কিন্তু এই মুহূর্তে সব ধরনের রোগী মিলিয়ে ভর্তি আছে ১০৪৫ জন। আপনি যে ফ্লোরেই গেছেন, দেখেছেন যে পা ফেলার জায়গা নাই। এখানেই কিন্তু আমরা প্রচলিত সেবার ৫০ শতাংশে চলে আসছি।

<div class="paragraphs"><p>ঢাকার মুগদা হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু ও কিশোরী</p></div>

ঢাকার মুগদা হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশু ও কিশোরী

“আমার ক্ষমতা মন্ত্রণালয়, ডিজিকে জানানো; আমি তা করেছি। মন্ত্রণালয়ে ১০ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার, ২০ জন মেডিকেল অফিসার, ৫০ জন নার্স চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আমায় ৮ জন ডাক্তার ও ৮ জন নার্স দেওয়া হয়েছে। যা পেয়েছি, তা দিয়েই আমার কাজ চালাতে হচ্ছে। তাই আমি প্রত্যাশিত সেবা দিতে পারছি না।”

‘লক্ষণ থাকলেই টেস্ট করাতে হবে’

হাসপাতালে মশার উপদ্রব আছে কি না, জানতে চাইলে ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, “হাসপাতালে মশা নাই। আর থাকলেও স্প্রে দেওয়া যাবে না। কারণ এতে বাচ্চাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি আছে। স্প্রে করলে তাদের শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কিন্তু এই মশারির কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নাই। এটা রোগীকে বুঝতে হবে।”

কোন কোন এলাকা থেকে বেশি রোগী আসছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ডেঙ্গু তো এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে। শুরুতে মুগদা, কাজলা, শনিরআখড়া, মান্ডা থেকে আসতো। কিন্তু এখন মায়াকানন, বনশ্রী, রামপুরা, সবুজবাগ, যাত্রাবাড়ী ইত্যাদি এলাকা থেকেও আসছে।

“তাছাড়া ঢাকার বাইরে মানে কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী থেকেও ডেঙ্গু রোগী পাচ্ছি আমরা।”

ডেঙ্গু পরিস্থিতি এতটা খারাপ হওয়ার পেছনে সিটি করপোরেশন ও অভিভাবকদের দুর্বলতা আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে আরেকটা সমস্যা হল, প্রায় সবাই দেরি করে হাসপাতালে আসছে। বুঝতে পারেন নাই।

“কিন্তু হাসপাতালে আসতে আসতে তো রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। একাধিক অর্গান যদি একসাথে ফেইল করে, তাহলে রোগী ঝুঁকিতে পড়ে যায়। এইজন্য লক্ষণ থাকলেই রোগীকে টেস্ট করিয়ে সিউর হতে হবে।”


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০  

নামাজের সময় সূচি

    Dhaka, Bangladesh
    শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
    ওয়াক্তসময়
    সুবহে সাদিকভোর ৪:৫৯ পূর্বাহ্ণ
    সূর্যোদয়ভোর ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ
    যোহরদুপুর ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
    আছরবিকাল ২:৫০ অপরাহ্ণ
    মাগরিবসন্ধ্যা ৫:১১ অপরাহ্ণ
    এশা রাত ৬:৩০ অপরাহ্ণ
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!