নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনে সংঘটিত নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং নোয়াখালীর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আবুল মনসুর ছিদ্দিকী।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো.ইকবাল হোসেন বিষয়টি নিশিত করেছেন। এরআগে রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন শাহিনের ট্রাক প্রতীকের প্রধান সমন্বয়ক বাহার উদ্দিন খেলন এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন শাহিনের নির্বাচনী সদস্য সচিব আতাউর রহমান নাছেরের বাড়িতে নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনা তদন্ত করা হয়।
তদন্তকালে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে নিশ্চিত করেন বেঞ্চ সহকারী মো.ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, তদন্তের সময় প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন বিজ্ঞ নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল মনসুর ছিদ্দিকী। এসময় ঘটনার সতয়তা মিললেও কারও পরিচয় সনাক্ত করা যায়নি। তবে এটি নির্বাচনী সহিংসতা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান বেঞ্চ সহকারী ইকবাল।
উল্লেখ : গত শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) ভোর রাতে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের শিহাব উদ্দিন শাহিনের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কের বাড়িতে ককটেল নিক্ষেপ ও গেইটে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বাহার উদ্দিন খেলন জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিলের কনিষ্ঠ পুত্র। তাঁর অভিযোগ, নৌকার প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরী ট্রাক প্রতীকের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষানিত হয়ে ভোটারদের মাঝে আতংক তৈরির লক্ষ্যে আমার বাড়িতে এই ককটেল হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।
একই দিন রাত ১১টায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান নাছেরের বাড়িতে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটেছে। আতাউর রহমান নাছের স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন শাহিনের নির্বাচনী সদস্য সচিব। তাঁর অভিযোগ, গত ১৫ বছর একরামুল করিম চৌধুরীর অপশাসনের কারণে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে দল থেকে মনোনয়ন দিলেও তিনি কর্মী-সমর্থক শূন্যতায় ভোগছেন। তাই ট্রাক প্রতীকের পক্ষে মানুষের গণজোয়ার দেখে ভোটারদেরকে আতংকিত করার জন্য নৌকার প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরী তাঁর লোকজন দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নে একরামুল করিম চৌধুরীর নৌকা মার্কার কেন্দ্র কমিটি গঠন অনুষ্ঠানে স্বতন্ত্র প্রার্থী শিহাব উদ্দিন শাহিনের ট্রাক প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের ঠ্যাং-ট্যাং ভেঙে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন দাদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মতিন।
হুমকি প্রদানের ভিডিও বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ভোটারদের মাঝে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়।
এসব ঘটনায় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ এবং ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার তদন্তে নামেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি।