জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ডেকে এনে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিতের পাশাপাশি সনদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরো বলেন, সিন্ডিকেট সভায় পরীক্ষা শেষ হওয়া শিক্ষার্থী এবং পোষ্য কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে হল ছাড়তে নির্দেশনা দেয়াসহ চারটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ধর্ষণ, ধর্ষণের কাজে সহযোগিতা করায় জন্য দেশের প্রচলিত আইনে মামলা করার সিদ্ধান্তও হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, জড়িত শিক্ষার্থীদের সনদ স্থগিতের পাশাপাশি সাময়িক বহিষ্কার ও ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ ও অস্থায়ী দোকানপাট নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অছাত্রদের আবাসিক হল থেকে বের হওয়ার নির্দেশনা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে। তারা বের না হলে বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিন্ডেকেট সদস্য ও কমিটির প্রধান অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন, ধর্ষণের ঘটনা খতিয়ে দেখতে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ ছায়েদুর রহমান, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফসানা হক ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (আইন) মাহতাব-উজ-জাহিদ।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ আবাসিক হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে কৌশলে বোটানিক্যাল গার্ডেনে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, তার পরিচিত মামুনুর রশীদ মামুনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে। পরে ভুক্তভোগীর স্বামী ছয়জনকে আসামি করে ঘটনার রাতেই আশুলিয়া থানায় ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন’ আইনে মামলা করেন।
১৯ বছর বয়সি ওই তরুণীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়। পুলিশ রবিবার ভোরের দিকে মামলার প্রধান আসামি মোস্তাফিজুর রহমানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়ার আবেদন করে। পরে গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের হেফাজতে পায় পুলিশ।