জরিপ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজসে ভুয়া খতিয়ান সৃজন করে জেলা প্রশাসনের খাস খতিয়ান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮ একর ৫ শতাংশ ভূমির মালিকানা দাবির পর এবার ওই ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত উত্তর ওয়াপদা উচ্চ বিদ্যালয়ের খাস দখলীয় ভূমিতে মাটি ভরাট করে চলছে জবরদখলের চেষ্টা করছে স্থানীয় মোসলেহ উদ্দিন ও মহি উদ্দিন নামের দুই ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে।
এই ব্যাপারে গত ১১ ফেব্রæয়ারী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), সুধারাম মডেল থানা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরও বন্ধ হয়নি সরকারি জায়গায় মাটি ভরাটের কাজ।
অভিযোগকারী স্থানীয় বাসিন্দা মো. নুর হোসেন ও স্থানীয় উত্তর ওয়াপদা বাজারের ব্যবসায়ী এবং এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর উত্তর ওয়াপদা বাজার ও আশপাশের ভূমিতে বসবাস করছেন কয়েক’শ পরিবার। বাজারে রয়েছে ৮ শতাধিক দোকান, দুইটি মসজিদ ও একটি হাইস্কুল, ১টি দিঘি ও ১টি পুকুর। ১৯৬৩-৬৪ সালে বাজারসহ ভূমিগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড অধিগ্রহণ করে। পরবর্তীতে ২০১২-১৩ সালে জেলা প্রশাসক ওই ভূমির ২ একর ৬৪ শতাংশ ভূমি পূন:অধিগ্রহণ করে অধিগ্রহনকৃত ভূমিতে জেলা প্রশাসক স্থানীয় বসবাসকারী ও বাজার ব্যবসায়ীদের বন্দোবস্ত দিয়ে রাজস্ব আদায় করে আসছে। বিগত আর.এস হাল জরিপের সময় ওই ৮ একর ৫ শতাংশ ভূমি ১নং খাস খতিয়ানে জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে রেকর্ড না হয়ে জরিপ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজসে ভূমিগ্রাসী মহিন উদ্দিন ও মোছলে উদ্দিন নামের জনৈক দুই ব্যক্তির নামে রেকর্ডভুক্ত করা হয়। এর পর থেকেই ভূমিগ্রাসীরা বাজারের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীকে হুমকি দিয়ে ওই ভূমি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে।
ভূমিদস্যুরা ওই হুমকির অংশ হিসেবে গত ০৮ ফেব্রæয়ারী বৃহস্পতিবার থেকে স্থানীয় উত্তর ওয়াপদা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতিক উল্যাহ এবং সভাপতিকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ প্রদান করে তাদের যোগসাজসে বিদ্যালয়ের খাস দখলীয় জায়গায় মাটি ভরাট করে জোর জবর-দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এবিষয়ে গত ১১ ফেব্রæয়ারী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), সুধারাম মডেল থানা এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরও এখন (১৮ ফেব্রæয়ারী) পর্যন্ত মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ করেনি ভূমিদস্যুরা। এই জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে বিদ্যালয়ের সরকারি খাস জায়গা দখলের বিষয়ে স্থানীয় লোকজন ও ব্যবসায়ীগন দখলকারীদের বাঁধা প্রদান করলে তারা কারো বাঁধা না মেনে বরং বাঁধা প্রদানকারীদের বিভিন্ন মামলা-হামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। এতে বিদ্যালয়ের জায়গা বেদখল হওয়া এবং জায়গা সংকটে এলাকায় শিক্ষার আলোকবর্তিকা নিভে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মোসলেহ উদ্দিন ও মহি উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিক বার কল করে সংযোগ না পাওয়ায় তাদের মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বায়েজীদ বিন আখন্দ বলেন, এবিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সরেজেমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে এবিষয়ে মন্তব্য জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুন্সি আমির ফয়সালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।