এনবি নিউজ : তিন মাস ও এর বেশি মেয়াদের আমানতে সুদের হার মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে কম হতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রবিবার এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সার্কুলার অবিলম্বে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেশের ব্যাংকগুলো গড়ে চার শতাংশের কিছু বেশি হারে সুদ বা মুনাফা দিয়ে থাকে।
সুদের হার অতিমাত্রায় কমে গেলে ভবিষ্যতে ব্যাংকে আমানতের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সুদ বা মুনাফা নির্ধারণে আগের তিন মাসের গড় মূল্যস্ফীতি হারকে বিবেচনায় নিতেও ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে। গত জুন মাসে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল পাঁচ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
সার্কুলারে বলা হয়, আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং ব্যাংকিং খাতে দায়-সম্পদের ভারসাম্যহীনতা রোধকল্পে তিন মাস ও
তদুর্ধ্ব মেয়াদি আমানতের ওপর সুদ বা মুনাফা হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে নিম্নে বর্ণিত নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে: ব্যক্তি পর্যায়ের মেয়াদি আমানত এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকতা-কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, অবসরোত্তর পাওনাসহ বিবিধ পাওনা পরিশোধের লক্ষ্যে গঠিত তহবিল বাবদ রক্ষিত যেকোনো পরিমাণ মেয়াদি আমানতের ওপর সুদ বা মুনাফা হার মূল্যস্ফীতি হার অপেক্ষা কোনোক্রমেই কম নির্ধারণ করা যাবে না; অনুচ্ছেদ নং-৩(ক)-এ বর্ণিত আমানতের ওপর কোনো নির্দিষ্ট মাসে সুদ বা মুনাফা হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে ওই মাসের অব্যবহিত তিন মাস পূর্বের মূল্যস্ফীতি হারকে (বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ১২ মাসভিত্তিক গড়) বিবেচনায় নিতে হবে ও ঋণ বা বিনিয়োগের ওপর সুদ বা মুনাফা হার বিআরপিডি সার্কুলার নং-০৩/২০২০-এর নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বোচ্চ নয় শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়, সম্প্রতি ব্যাংকিং খাতে আমানতের সুদ বা মুনাফা হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ব্যাংক থেকে পাওয়া বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, অধিকাংশ ব্যাংক কর্তৃক মেয়াদি আমানতের ওপর মূল্যস্ফীতি হারের চেয়ে কম হারে সুদ বা মুনাফা প্রদান করা হচ্ছে। ক্ষুদ্র আমানতকারীসহ অন্যান্য আমানতকারীদের একটি অংশ তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য ব্যাংকে রক্ষিত আমানতের সুদ বা মুনাফার ওপর নির্ভরশীল। ব্যাংকে রক্ষিত মেয়াদি আমানতের ওপর মূল্যস্ফীতি হারের চেয়ে কম হারে সুদ বা মুনাফা প্রদান করায় আমানতকারীদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাছাড়া, মেয়াদি আমানতের ওপর সুদ বা মুনাফা হার অত্যধিক হ্রাস জনসাধারণের সঞ্চয় প্রবণতাকে নিরুৎসাহিত করে। ফলে আমানতকারীগণ কর্তৃক তাদের সঞ্চিত অর্থ ব্যাংকে জমা রাখার পরিবর্তে ঝুঁকিপূর্ণ খাতসহ বিভিন্ন অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের প্রবণতা বাড়ছে।
এছাড়া বলা হয়, ব্যাংক-তহবিলের প্রধান উৎস হলো বিভিন্ন ধরনের আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগৃহীত আমানত। আমানতের ওপর সুদ বা মুনাফা হার অতিমাত্রায় হ্রাস পেলে ভবিষ্যতে ব্যাংকের আমানতের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। ফলে, ব্যাংকের দায়-সম্পদ ব্যবস্থাপনায়ও ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হতে পারে।
এ টি