শাকিলা সাথী : ব্যাংক খাতের বিভিন্ন অনিয়মের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার জেরে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
অনিয়মের তথ্য সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করার অভিযোগ তুলে সম্প্রতি উপ পরিচালক থেকে পরিচালক মর্যাদার অন্তত ১০ কর্মকর্তাকে এসব নোটিস দেওয়া হয়।
এছাড়া নির্বাহী পরিচালক মর্যাদার তিন কর্মকর্তাকে ডেকে মৌখিকভাবে সতর্ক করার অভিযোগও উঠেছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “নোটিস দেওয়া হয়েছে, তা জবাব দিলেই নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। ব্যাংকিং সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য ওই বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেও পাওয়ার সুযোগ আছে। তাই তথ্য এখান (কেন্দ্রীয় ব্যাংক) থেকেই গেছে, এটা বলা যাবে না।
“বাংলাদেশ ব্যাংকের অফিসিয়াল মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাই সাংবাদিকদের প্রয়োজনীয় তথ্য দেবেন, যাতে সব তথ্যের সঠিকতা ঠিক থাকে।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব নোটিস দেওয়ার পেছেন ভূমিকা রেখেছেন একজন ডেপুটি গভর্নর। সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনের জেরে এসব শোকজের ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকে এক ধরনের ‘ভীতিকর’ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে কেউ নাম প্রকাশ করে কোনো মন্তব্য করতে চান না।
ডলার সংকট, ডলারের অস্বাভাবিক মুনাফায় জড়িত ব্যাংকের নাম, ছয়টি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানদের সরিয়ে দেওয়া, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কারণ দর্শানোর নোটিস, ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে সীমার অতিরিক্ত ডলার ব্যয়, ঋণ কেলেঙ্কারি, আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরইমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের শোকজের ঘটনা ঘটেছে।
জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ হচ্ছে অনিয়ম দুর্নীতিকে ধরা, তদন্ত করা। কে তথ্য দিল তাকে ধরা না। এতে দুর্নীতি উৎসাহিত হয়।
“ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা যদি তথ্য দিয়েও থাকে, তারপরও শোকজ করা যাবে না। কারণ হচ্ছে তথ্য অনেকের কাছে থাকে, কিভাবে বের হল তা বিবেচ্য নয়।”
২৬.০৯.২০২২