ফরাসি বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানি সানোফির বাংলাদেশ অংশকে (সানোফি বাংলাদেশ) কিনে দেশীয় ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মা। ৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ড বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪১১ কোটি টাকায় সানোফির সিংহভাগ শেয়ারের মালিকানা কিনতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এ অধিগ্রহণ সংক্রান্ত কোম্পানি দুটির মধ্যে চুক্তি হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার কোম্পানি দুটির পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা বলেছে, আগামী ৯ মাসের মধ্যে এ অধিগ্রহণ চুক্তি সম্পন্ন হবে। বিষয়টি সবার আগে প্রকাশ হয় লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে (এলএসই)। কারণ, দুই প্রতিষ্ঠানই এলএসইর অন্তর্ভুক্ত।
বেক্সিমকো ফার্মা জানিয়েছে, সানোফি বাংলাদেশের ৫৪ দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ার অধিগ্রহণ করবে তারা। বর্তমানে এ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে কোম্পানিটির ফ্রান্সভিত্তিক মূল প্রতিষ্ঠান সানোফির হাতে। এ শেয়ারই প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে কিনে নেবে বেক্সিমকো ফার্মা। এর বাইরে সানোফি বাংলাদেশের প্রায় ২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের। আর ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা আছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি)।
অপরদিকে সানোফি বাংলাদেশ জানিয়েছে, বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে অধিগ্রহণ চুক্তির আওতায় কোম্পানিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন কোম্পানিতে স্থানান্তরিত হবেন। এমনকি প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর তিন বছরের চাকরির নিশ্চয়তাও নিশ্চিত করা হয়েছে। এমনকি শেয়ার হস্তান্তরের পরও সানোফি বাংলাদেশ আলাদা কোম্পানি হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। বর্তমানে সানোফি বাংলাদেশের কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন ৮০০ জনের বেশি।
সানোফি ১৯৫৮ সাল থেকে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করে আসছে। শুরুতে এটির নাম ছিল ‘মে অ্যান্ড বেকার’। ২০০৪ সালে এসে সানোফি ও অ্যাভেন্টিস গ্রুপ একীভূত হয়ে এটির নাম হয় সানোফি-অ্যাভেন্টিস। এরপর ২০১৩ সালের নাম বদলে সানোফি বাংলাদেশ রাখা হয়। সানোফি বাংলাদেশ এ দেশের কারখানার বিভিন্ন ওষুধ তৈরির পাশাপাশি বিদেশ থেকে আমদানি করা ওষুধও বিক্রি করত। বাজারে সানোফির বহুল প্রচলিত ওষুধের মধ্যে রয়েছে লান্টাস, ফিমোক্সিল, ফ্লাজিল, এভিল ইত্যাদি। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, টিউমার চিকিৎসা ও চর্মরোগে সানোফির ওষুধ বেশি ব্যবহার করা হয়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে সানোফি প্রায় ৩৮৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে।