এনবি নিউজ :
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমীর ডা. মো. শফিকুর রহমানের ছেলে ডা. রাফাত সাদিক সাইফুল্লাহ এক সময় ছাত্রশিবির করতেন। পরে উগ্রবাদে উৎসাহী হয়ে জঙ্গিবাদে নাম লেখান। কুরআন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আড়ালে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে উগ্রবাদী বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মভীরু তরুণদের জঙ্গিবাদের দীক্ষা দেওয়া শুরু করেন।
একপর্যায়ে তার নির্দেশে বেশ কয়েকজন তরুণ নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল ফিল হিন্দাল শারক্কিয়ার হয়ে প্রশিক্ষণ নিতে বান্দরবানে হিজরত করেন। এ সংগঠনের কয়েকজন সদস্যকে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন ডা. রাফাত। বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শক্তিমত্তাও পরীক্ষা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায়। ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সিটিটিসি প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বুধবার সিলেটের জালালাবাদের রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে এক সহযোগীসহ ডা. রাফাত চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় ডা. রাফাত ও তার সহযোগী আরিফ ফাহিম সিদ্দিকীর তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিটিটিসির পুলিশ পরিদর্শক মো. আবুল বাসার।
অন্যদিকে আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে তাদের তিন দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রাফাত সাদিক জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সিলেট অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়ক। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে জিহাদি দাওয়াতের কার্যক্রম চালিয়ে আসছেন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার হওয়া তিন জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদে ডা. রাফাতের নাম বেরিয়ে আসে। এরপরই তাকে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডা. রাফাত জানিয়েছেন, ২০২১ সালের জুনে তার ও অপর সহযোগী তাহিয়াতের নেতৃত্বে সিলেট থেকে ১১ জন বান্দরবানে হিজরত করেন। বান্দরবানে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনের অন্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় ৭ দিন পর তারা সিলেট ফিরে দাওয়াতি কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে সিটিটিসি জানায়, ডা. রাফাত এবং তার সহযোগীরা পুনরায় মসজিদে এবং লেকেরপাড়ে বসে জিহাদ সম্পর্কিত আলোচনা অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে ডা. রাফাতের নির্দেশনায় তাহিয়াত সহযোগীসহ ঢাকায় হিজরত করার উদ্দেশ্যে বের হয়ে গ্রেফতার হন তারা।
এক প্রশ্নের জবাবে সিটিটিসি প্রধান বলেন, নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল ফিল হিন্দাল শারক্কিয়া নামকরণটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে করা হয়েছে।
তবে সংগঠনটির কার্যক্রম চলছে ২০১৭ সাল থেকে। ডা. রাফাত এর আগে বান্দরবানের ক্যাম্পে গিয়ে সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে ওই শীর্ষ নেতাদের সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এটি