আগে চাষির স্বার্থ দেখা হবে তারপর পেঁয়াজ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে—কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের এমন ঘোষণার পর পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। মঙ্গলবার (২৩ মে) পাবনার সুজানগর ও সাঁথিয়ায় পেঁয়াজ চাষিদের সমাবেশে কৃষিমন্ত্রী একথা বলেছিলেন। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেওয়ায় দরপতন শুরু হয়।
পেঁয়াজ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি নীতিনির্ধারকদের ঘোষণায় পেঁয়াজের দর ওঠানামায় ভূমিকা রাখে। তারা জানান, গত ১৯ মে পাবনার হাট-বাজারে পেঁয়াজের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২৮০০-২৯০০ টাকা মণ। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রীর পেঁয়াজ আমদানির আভাস দেওয়ার পরদিনই শনিবার (২০ মে) সবচেয়ে ভালোমানের প্রতিমণ পেঁয়াজ ২২০০-২৪০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়।
মঙ্গলবার পাবনার পেঁয়াজ চাষপ্রধান এলাকা সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলায় চাষিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন কৃষিমন্ত্রী ও কৃষি সচিব। কৃষিমন্ত্রী চাষিদের সঙ্গে উৎপাদন খরচ ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। সেখানে তিনি বলেন, চাষিরা যেন ৬৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে। তবে ৮০ টাকা কেজি হলে সব শ্রেণির ভোক্তার জন্য তা কষ্টকর হয়ে যাবে।
সুজানগর উপজেলার কৃষক শাহজাহান আলী বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী যখন পেঁয়াজ আমদানির কথা বলেছিলেন তখন পেঁয়াজের দর কমে গিয়েছিল। এখন কৃষিমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, খুব জরুরি না হলে সরকার পেঁয়াজ আমদানি করবে না। এতে বাজারদর মোটামুটি ভালো আছে। এতে তারা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন।
ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আবু হানিফ বলেন, প্রতিমণ পেঁয়াজের উৎপাদন খরচ পড়ে যায় ২৫০০ টাকার মতো। তাই ২৬০০-২৭০০ টাকা প্রতিমণ পেঁয়াজ বিক্রি করতে না পারলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
জোড়পুকুরিয়া গ্রামের কৃষক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, ২৫০০ টাকা বা তার বেশি দর না পেলে তাদের উৎপাদন খরচ উঠবে না। যদি সরকার আমদানি করে তাহলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পেঁয়াজ আমদানি না করার সিদ্ধান্ত তাদের জন্য ভালো হয়েছে।
পেঁয়াজ ব্যাপারী আবু তাহের বলেন, সরকার আমদানি করার ঘোষণা দেওয়ায় দাম কিছুটা কমে গিয়েছিল। সরকার এখন পেঁয়াজ আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে তারা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপপরিচালক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, সরকার আপাতত পেঁয়াজ আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে চাষিরা লাভবান হবেন।