আসাদুজ্জামান তপন : নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার-গণসংযোগে গতকাল শনিবার বরিশাল শহর ছিল সরগরম। প্রচার শেষে সর্বত্র আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কে হতে যাচ্ছেন। বিএনপি এই নির্বাচনে নেই। কিন্তু ভোটের হিসাব-নিকাশে বিএনপির ‘ভোটব্যাংকের’ দিকেই সবার নজর।
এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কখনো ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী সৈয়দ ফয়জুল করিম, কখনোবা সাবেক মেয়র আহসান হাবীব কামালের ছেলে কামরুল আহসান ওরফে রূপণের নাম এসেছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেনও মাঠে আছেন।
খায়ের আবদুল্লাহর বিপরীতে থাকা তিন প্রার্থীই আওয়ামী লীগ বা সরকারবিরোধী ভোট টানবেন, সাধারণভাবে এমনটাই ধারণা করা হয়। সে হিসেবে বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে যতটা নির্ভার থাকার কথা, সেটা পারছে না। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা এনবি নিউজকে বলছেন, তাঁদের একটা উদ্বেগ হচ্ছে, সরকারি দলকে হারানোর মনোভাব নিয়ে বিরোধী দলের সমর্থকেরা নীরবে এক জোট হয়ে যান কি না এবং সবাই কোনো একজন প্রার্থীর দিকে ঝুঁকে পড়েন কি না। যেমনটা গাজীপুরে জাহাঙ্গীরের মায়ের ভোটের ক্ষেত্রে হয়েছিল বলে মনে করেন সেখানকার নেতারা।
বিএনপির ভোটব্যাংক শেষ পর্যন্ত কোন দিকে যাবে, এ নিয়ে গতকাল দিনভর বরিশালে নানা রকম আলোচনা ছিল চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অঙ্গন পর্যন্ত। শহরের বাংলাবাজার মোড়ের চা–দোকানি বাবুল গাজী ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। গতকাল বিকেলে তাঁর দোকানে বেশ কয়েকজন চা পান করছিলেন। দোকানি ও ক্রেতা—সবাই ভোটের আলাপে ব্যস্ত। কার পাল্লা ভারী, তা নিয়ে একেকজন একেক মন্তব্য করছেন। বাবুল গাজী বলেন, ‘যা-ই বলেন, শেষমেশ নৌকাই পাস করবে।’ চায়ে বিস্কুট ভিজিয়ে খাচ্ছিলেন রিকশাচালক আবুল কালাম। তিনি পাল্টা মন্তব্য করলেন, ‘যা হুনি বুঝি, তা অইলো, বিএনপি যে দিকে যাইবে, হেই পাল্লা ভারী অইবে। হ্যার লগেই কনটেস্ট অইবে নৌকার।’
অবশ্য ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনের সময় কে জিতবে, কে হারবে—এমন মন্তব্য প্রকাশ্যে করতে দেখা যায়নি। এবার ব্যতিক্রম। ভীতির সঞ্চার হতে পারে, তেমন পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। যারা ভীতি তৈরি করতে পারে, তাদের এবার সেভাবে মাঠে দেখাও যাচ্ছে না। নির্বাচনের প্রচার শান্তিপূর্ণ হওয়ায় ভোটের দিনের পরিবেশ নিয়ে খুব একটা শঙ্কার কথাও শোনা যাচ্ছে না। এ কারণেই ভোটের হিসাব-নিকাশটা আলোচনায় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।