এনবি নিউজ : ডলারের সংকট এখনো কাটেনি। ব্যাংকগুলো চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছে না। আবার যেসব ঋণপত্র খোলা হয়েছে, অনেক ব্যাংক তার বিল পরিশোধ করতে পারছে না। বিদেশি ব্যাংকগুলো দেশের ব্যাংকগুলোকে যেসব ঋণ দিয়েছে, তার বেশ কয়েকটির মেয়াদ শেষ হলেও ডলার ফেরত পাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করেছে বেসরকারি খাতে প্রাইম ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। এর মাধ্যমে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথমবার ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, অর্থবছরের হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ভালো দেখাতে ব্যাংক থেকে ডলার কেনা শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত রয়েছে, জুনের মধ্যে প্রকৃত রিজার্ভ ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলারে উন্নীত করা।
এ জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার বেসরকারি খাতের প্রাইম ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতি ডলারের জন্য ১০৬ টাকা দাম দিয়েছে। পাশাপাশি একই দামে আমদানি দায় মেটাতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ডলার-সংকটের উন্নতি হয়নি, কবে হবে, তা-ও কেউ বলতে পারছে না। বিদেশি কত দায় যে অনিষ্পন্ন হয়ে আছে, তা বের করা জরুরি। আইএমএফের শর্ত পূরণ করার জন্য ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকের কাছে ডলার নেই, এমন সময়ে ডলার কিনতে নিশ্চয়ই পেশাদারত্ব দেখানো হয়নি।
গতকাল বিক্রি করেছে ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১৩ কোটি ডলার বা ৩০ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। তবে প্রকৃত রিজার্ভ আরও ৬০০ কোটি ডলার কম। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে প্রায় ১২০ কোটি ডলার এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধ করতে হবে, তখন আবার রিজার্ভ কমে যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র সরোয়ার হোসেন এনবি নিউজকে বলেন, প্রবাসী আয় বাড়ছে। ব্যাংকগুলোর ডলার ধারণও বাড়ছে। কোনো ব্যাংক ডলার বিক্রি করতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকে কিনছে। আবার আমদানি দায় মেটাতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। সংকট ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, অনেক ব্যাংক আমদানি দায় শোধ করতে পারছে না। এর মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক একরকম জোর করেই ডলার কিনে নিয়েছে। কোনো ব্যাংকে ডলার উদ্বৃত্ত থাকলে অন্য সব ব্যাংক সেই ডলার কেনার জন্য প্রস্তুত আছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক যে ডলার বিক্রি করেছে, তা অফশোর ইউনিট থেকে ঋণ করা।