এনবি নিউজ ডেস্ক : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফের) বোর্ড পাকিস্তানের জন্য ৩০০ কোটি ডলার জরুরি ঋণের (বেলআউট) অনুমোদন দিয়েছে। খবর বিবিসির।
এই ঋণের প্রায় ১২০ কোটি ডলার বিলিয়ন অগ্রিম পাবে সংকটে বিধ্বস্ত দেশটি, আর বাকি অংশ আগামী নয় মাসের মধ্যে প্রদান করা হবে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি ছিল ঋণ খেলাপি হওয়ার দ্বারপ্রান্তে এবং তাদের এক মাসের আমদানি খরচ মেটানোর জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা ছিল না। এই সপ্তাহে দেশটি মিত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) কাছ থেকেও তহবিল পেয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টায় বেলআউট একটি বড় পদক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘এটি তাৎক্ষণিক থেকে মধ্যমেয়াদী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থানকে শক্তিশালী করবে এবং সরকারকে সামনের পথরেখা নির্ধারণের জন্য আর্থিক জোগান দেবে।’
পাকিস্তানের দুর্বল অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দীর্ঘমেয়াদী গুরুতর সমস্যাগুলো কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে আট মাস ধরে আলোচনার পরে আইএমএফ এই চুক্তিতে পৌঁছায়।
দেশটির বেশির ভাগ অংশ গত বছরের বিধ্বংসী বন্যায় আক্রান্ত হয়েছিল, যা এর অন্যান্য প্রধান সমস্যাগুলো আরও বাড়িয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা।
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, সৌদি আরব মঙ্গলবার (১১ জুলাই) পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ২০০ কোটি ডলার জমা করেছে।
গতকাল বুধবার ইসহাক দার বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ১০০ কোটি ডলার পেয়েছে।
তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো গত এপ্রিলে পাকিস্তানকে অর্থের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু আইএমএফের জরুরি ঋণ চূড়ান্ত হবে কি না, তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা অর্থ হস্তান্তর বন্ধ রেখেছিল।
সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থসহ পাকিস্তানের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে সহায়তার আরও তহবিলের পথ করে দেবে আইএমএফের এই চুক্তি।
অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, এই মাসের শেষ নাগাদ পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রায় ১৫ বিলিয়ন বা এক হাজার ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শাহবাজ শরীফের জোট সরকার এই বছর জাতীয় নির্বাচনের মুখোমুখি হতে চলেছে। তাদেরকে এখনও বেলআউটের শর্ত পূরণের জন্য বড় ধরনের খরচ কমাতে হবে।
পাকিস্তানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। মুদ্রাস্ফীতির আনুষ্ঠানিক বার্ষিক হার বর্তমানে প্রায় ৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল সুদের হার রেকর্ড ২২ শতাংশে উন্নীত করেছে, কারণ এটি মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে লড়াই করছিল।
এবারের বেলআউটটি আইএমএফ থেকে পাকিস্তানের পাওয়া দীর্ঘ সমর্থনের সর্বশেষ ঘটনা। দেশটি ১৯৫৮ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা গোষ্ঠীটির কাছ থেকে ২০টিরও বেশি ঋণ নিয়েছে।