এনবি নিউজ : ফেনীর সোনাগাজীতে গত ২৪ ঘণ্টায় বেওয়ারিশ কুকুরের কামড়ে নারী-শিশুসহ ৩০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ জনই শিশু। তারা সবাই উপজেলার ওলামা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থী। শনিবার (৫ আগস্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চর চান্দিয়া, চর সাহাভিকারী, সুজাপুরসহ আরও কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টির সঙ্গে হঠাৎ করে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। শনিবার একদিনে কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে ২২ রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। বাকীরা বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এনিয়ে গত ৫ দিনে কুকুর, বিড়াল ও ইঁদুরে কামড়ে আহত হয়ে অন্তত ৪০ জন হাসপাতালে এসেছেন। আহতদের মধ্যে ৩৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কুকুরের কামড় থেকে হওয়া র্যাভিস রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। অন্যরা বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ওলামা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাজমুল হাসান বলেন, শনিবার বিদ্যালয়ে শেখ কামালের জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলছিল। এসময় কিছু শিক্ষার্থী পাশেই খেলা করছিল। তখন হঠাৎ করে একটি পাগলা কুকুর তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বিদ্যালয়ের অন্তত চার-পাঁচজন শিক্ষার্থীকে কামড়ে আহত করে। একই কুকুর বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে বাজারে আরও ১০-১২ জন স্থানীয় মাদরাসার শিক্ষার্থী ও পথচারীকে কামড়ে আহত করেছে।
নাছির উদ্দিন নামে একজন অভিভাবক বলেন, ওলামা বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচে আমার মেয়ে সোহানা তাওবী (২) দাঁড়িয়ে চিপস খাচ্ছিল। এমন সময় একটি কুকুর তার হাতে ও পিঠে কামড়ে আহত করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আরও দুই ছেলে কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কথা হয় সুফিয়া বেগম নামে এক বৃদ্ধার সঙ্গে। তিনি বলেন, শনিবার বেলা ১১টার দিকে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওলামা বাজার এলাকায় আমার নাতি আশফাককে একটি পাগলা কুকুর মুখে ও মাথায় কামড়ে আহত করেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. আবদুল কুদ্দুছ বলেন, গত কয়েক দিনে কুকুর, বিড়াল ও ইঁদুরের কামড়ে আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ৩৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে শুধু শনিবার কুকুরের কামড়ে আহত শিশু ও নারীসহ ২২ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। অনেকে স্থানীয় ক্লিনিক থেকেও চিকিৎসা নিয়েছেন।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উৎপল দাস বলেন, কুকুর, বিড়াল ও ইঁদুরের কামড়ে আহত রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আহতদের নিয়মিত ওষুধ ও টিকা চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।