এনবি নিউজ : শারদীয় দুর্গোৎসবের আজ মহাষ্টমী। এই দিনে দেবীকে মহাগৌরী রূপে পূজা করা হয়। পুরাণ অনুযায়ী, অষ্টমীর দিনে বিভিন্ন অস্ত্র, রত্নহার ও পদ্মমালা দিয়ে দেবীকে সাজিয়ে তুলেছিলেন দেবতারা। মহাঅষ্টমী তিথিতে দেবী বধ করেছিলেন মহিষাসুরকে। শাস্ত্রমতে তাই এই দিনে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার গুরুত্ব বেশি।
আজ রোববার (২২ অক্টোবর) মহাষ্টমী ও সন্ধিপূজা। সকালে দেবীর মহাষ্টমী কল্পারম্ভ ও মহাঅষ্টমী বিহিত পুজার পর চলছে অঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ। তবে আজ প্রধান আকর্ষণই হচ্ছে কুমারী পূজা। রামকৃষ্ণ মিশনসহ বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপে একই সঙ্গে কুমারী পূজা চলছে।
শাস্ত্রমতে, কোলাসুর যখন স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতালজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছেন, তখন দেব ও ঋষিকূল শরণাপন্ন হয়েছিলেন দেবী কালীর। দেবী কুমারী রূপ ধারণ করে বধ করেছিলেন অসুরকে। সেই কারণেই কুমারী পূজা।
প্রাচীন কাল থেকে প্রকৃতিকে মা মনে করা হয়। প্রকৃতিই মহামায়া— এই বিশ্বাসে উপাসনা করা হতো প্রকৃতির। তারই ধারবাহিকতায় বর্তমানে কুমারীকে দেবী জ্ঞানে আরাধনা করা হয়। উপাসনা করা হয় নিষ্পাপতার। মানবজীবনের কলুষতা যাদের মধ্যে প্রবেশ করেনি তাদের দেবীরূপে আরাধনা করা হয়। ঋতুমতী হয়নি এমন কন্যাকে নতুন পোশাক, অলংকার, মুকুট ও তিলক, আলতা, আর মালা পরিয়ে পূজা করা হয় দেবীজ্ঞানে। এ সময় কুমারীর হাতে থাকে পদ্ম।
অষ্টমীর দিন এক থেকে ১৬ বছরের কন্যাদের দেবীরূপে পূজা করা হয়ে থাকে। তবে একেক বছরের কুমারীকে আবার একেক নামে ডেকে পূজা করা হয়। এক বছরের কুমারীকে ‘সন্ধ্যা’ নামে আরাধনা করা হয়। দুই বছর হলে ‘সরস্বতী’ নামে, তিন বছর হলে ‘ত্রিয়া’, চার বছর হলে ‘কালিকা’, পাঁচ বছরের মেয়েকে ‘সুভা’, ছয় বছরের মেয়ে হলে ‘উমা’, সাত বছর হলে ‘মালিনী’, আট বছরে ‘কুঞ্জিকা’, ৯ বছরে ‘কালসন্দর্ভা’, ১০ বছরে ‘অপরাজিতা’, ১১ বছরে ‘রুদ্রাণী’, ১২ বছরে ‘ভৈরবী’, ১৩ বছরে ‘মহালক্ষ্মী’, ১৪ বছরে ‘পীঠনায়িকা’, ১৫ বছরে ‘ক্ষেত্রজ্ঞা’ আর ১৬ বছরের কুমারীকে ‘অম্বিকা’ নামে উপাসনা করা হয়।
দেবী দুর্গাকে কালিকা, উমা, অপরাজিতা, রুদ্রাণী, ভৈরবী, অম্বিকাসহ একাধিক নামে ডাকা হয়। অন্যদিকে সরস্বতী ও লক্ষ্মী দুর্গার কন্যা। পুরাণ অনুসারে, মহালক্ষ্মী ও মহা সরস্বতীও আদ্যাশক্তির অংশ, তারই রূপ। কারও মতে, তিনি এক, নিরাকার এবং আদি ও অন্তের ধারক। তিনিই স্রষ্টা, তিনিই বিনাশিনী। তাই তাদের নামেও পূজা করা হয়।