এনবি নিউজ : রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে পুলিশ কর্মকর্তাদের বহনকারী বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগ জড়িত আছে বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছিল বিএনপি। তবে এবার বিএনপির এই ষড়যন্ত্র উন্মোচন করেছে ওই বাসটির চালক। গতকাল রোববার (২৯ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল এক ভিডিওতে পুলিশ বাসে কারা আগুন দেয় তার বিস্তারিত বর্ণনা দেন বাসটির চালক।
ঘটনার দিন থেকে বিএনপির মিডিয়া সেল পরিস্থিতি ধামাচাপা দিতে এই ঘটনার জন্য ডিবি পুলিশকে দায়ী করে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। তবে ওই বাসচালক বলেন, অগ্নিসংযোগকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চেয়ে আলাদা ছিল। তাদের পোশাকের (ভেস্ট) রঙ দেখে খুব স্পষ্টভাবেই তাকে আলাদা করা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমি যে বাসটি চালাচ্ছিলাম তাতে পুলিশ কর্মকর্তারা ছিলেন। তারা নেমে যাওয়ার পর আমি গাড়িটি পার্ক করি। তারা আমার বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর কালো পোশাক (ভেস্ট) পরা একজন ব্যক্তি বাসে ওঠে। তারপর পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
অগ্নিসংযোগকারীর পোশাকের রঙের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি (অগ্নিসংযোগকারী) কালো রঙের ভেস্ট পরেছিলেন। তার পোশাকের রঙের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নেভি-ব্লু বা ধূসর রঙের ভেস্টের কোনও মিল নেই।’
পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলা, পুলিশ বক্স পোড়ানো এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে দিনব্যাপী তাণ্ডব চালানোর ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়গুলো ক্রমেই সামনে আসছে। এ থেকে এটাই স্পষ্ট হচ্ছে যে, পুলিশ কর্মকর্তাদের বহনকারী বাসটিতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপির ভূমিকা থাকতে পারে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল প্রমাণে (ভিডিও, ছবি) দেখা গেছে, বিএনপির সদস্যরা রাস্তায় সহিংসতা চালানোর সময় ‘প্রেস’ লেভেলযুক্ত ভেস্ট পরেছিলেন। মূলত এ ধরনের কার্যকলাপে জড়িত থাকার বিষয়টিকে অস্পষ্ট করার জন্যই নতুন এই কৌশল অবলম্বন করেছেন তারা।
তবে এ ঘটনার বিষয়ে অস্বীকার যাওয়া বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের পূর্বের ঘটনাগুলোকে স্মরণ করিয়ে দেয়। কারণ আগেও তারা বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক হামলায় তাদের দলীয় ক্যাডারদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ওইসব ঘটনায় তাদের সক্রিয় ভূমিকা তুলে ধরা হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টন ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বিএনপি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পূর্বঘোষিত সমাবেশ ছিল। বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে টিয়ারশেল ও সাউন্ডগ্রেনেড ব্যবহার করে বিএনপি নেতাকর্মীদের পল্টন এলাকা থেকে হটিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের নিম্ম হামলায় পুলিশের এক সদস্য নিহত হন। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয় তারা।