খুলনা প্রতিনিধি,এনবি নিউজ : দীর্ঘ ৫ বছর পর আজ সোমবার খুলনায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর’সহ ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। গোটা শহর ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
বিকালে খুলনা বিভাগীয় জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন। মহাসমাবেশ ঘিরে খুলনা পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে। সমাবেশস্থল ও আশপাশে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে সোমবার দুপুর পৌনে ১ টায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে নির্মিত হেলিপ্যাডে অবতরণ করবেন। এরপর দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত সার্কিট হাউজে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবেন তিনি। বেলা পৌনে ৩টায় সার্কিট হাউজ মাঠে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এরপর যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ আয়োজিত খুলনা বিভাগীয় জনসভায়।
জেলা প্রশাসন জানায়, প্রধানমন্ত্রী ২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ২২৩ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ ৫টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। জনসভাস্থলে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ কাজ করবে। সার্কিট হাউজ মাঠ ও আশপাশে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। গোটা নগরী নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, জনসভাস্থলে আসা এবং জনসভা শেষে যাতে লোকজন নির্বিঘ্নে ফিরে যেতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাতে যানজট সৃষ্টি না হয় সেজন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। নৌপথে নৌ-পুলিশ টহল দেবে। জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে পুলিশ আনা হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে নগরীতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তোরণ, পোস্টার, প্লাকার্ড, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে নগরী। ইতোমধ্যে সার্কিট হাউজ মাঠে নির্মাণ করা হয়েছে নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে বিশালাকৃতির মঞ্চ। রাতে আলোকসজ্জা করা হচ্ছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে।
রবিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও এস এম কামাল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ আওয়ামী লীগের নেতারা সার্কিট হাউজ মাঠে জনসভার প্রস্তুতি ঘুরে দেখেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, নির্বাচনের আগে এই জনসভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী জনসভায় দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করবেন, তিনি আগামী নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ দিক সামনে নিয়ে আসবেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন জানান, জনসভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলা এবং গোপালগঞ্জ ও পিরোজপুরের ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এবারের জনসভা হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসভা। জনসভাস্থলের আশপাশের সব সড়কে মাইক দেওয়া হয়েছে, যাতে সভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর নেতাকর্মীরা রাস্তার দাঁড়িয়ে প্রিয় নেত্রীর ভাষণ শুনতে পারেন।
এদিকে খুলনায় পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ ও বিমানবন্দর নির্মাণসহ কমপক্ষে ২০টি দাবি নিয়ে অপেক্ষায় আছেন খুলনার মানুষ। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই ও সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, খুলনাবাসীর ১৮টি দাবি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা হবে। প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে ইতিবাচক ঘোষণা দেবেন বলে আমরা আশা করছি।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। পরে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ব্যক্তিগত সফরে খুলনা এসেছিলেন তিনি।