আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৪ দলের সঙ্গে আলোচনা শেষ। এখন সিট ভাগাভাগির ব্যাপারটা আজকালের মধ্যে ফাইনাল হয়ে যাবে। মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
১৪ দলের সঙ্গে গতকালের বৈঠক বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মূলত দলীয় জোটের চেয়ারম্যানের বক্তব্যটাই তারা শুনতে আগ্রহী ছিলেন। তার কাছে অনেক বিষয়ই, জাতীয়-আন্তর্জাতিক, তারপরে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি—এসব বিষয় নিয়ে তাদেরও জানার আগ্রহ ছিল যে, জোটের চেয়ারম্যান ও আমাদের প্রধানমন্ত্রী কী ভাবছেন। বাংলাদেশ নিয়ে বাইরে একটা খেলা আছে। কাজেই এটা নিশ্চয়ই প্রত্যেকের একটা স্বার্থ আছে। বাংলাদেশকে ঘিরে ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী দেশগুলো এখানে, তাদের মধ্যেও একটা কোঅর্ডিনেশন আছে।
‘এই বিষয়গুলো সময়ে সময়ে তারা আলাপ-আলোচনা করে এটাকে ব্যালেন্সড নীতি গ্রহণ করার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ (মত) পোষণ করেন। নেত্রী এখানে বাংলাদেশকে নিয়ে বাইরের স্বার্থের যে খেলা, এটা আজ নয়, বহুদিন আগে থেকেই আছে এবং এদেশে পঁচাত্তর ঘটে গেছে, তেসরা নভেম্বরও হয়েছে। বারে বারে তো হামলা আসছে। আমাদের মূল কথা হচ্ছে আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষা করব। সে ব্যাপারে আমরা সবাই একতম।’
কয়েক জায়গায় আওয়ামী লীগ মনোনীতদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রার্থিতা বাতিল গণতান্ত্রিক নির্বাচনে কি নতুন কোনো দৃষ্টান্ত? প্রার্থিতা বাতিল তো প্রায় ইলেকশনেই এখানে-ওখানে দু-চারটা হয়। তো তাতে কী ক্ষতি হবে? প্রার্থিতা যদি যৌক্তিকভাবে নির্বাচন কমিশন বাতিল করে, তা আমরা তো সেটা নিয়ে কোনো আপত্তি করতে যাব না। যেসব আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীতদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে, সেসব আসন শূন্য থাকবে কি না, প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শূন্য এবার কোথাও থাকবে না।
দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের স্ট্র্যাটেজি। ইলেকশন স্ট্র্যাটেজি। এটা তো ওপেনলি আমাদের চেয়ারম্যান বলে দিয়েছেন, জোটের চেয়ারম্যান, আমাদের প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সভাপতি। একাধিকবার তিনি বলেছেন। কাজেই ওই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন নতুন করে নেই।
জাতীয় পার্টির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে, কথা হবে। তিনি বলেন, উই আর হ্যাপি। আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। খুব সুন্দরভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে জাতীয় পার্টির সঙ্গে কথাবার্তা হয়েছে। রাজনৈতিক যে গুরুত্বটা আমরা দিয়েছি, সেখানে ঐক্যের কোনো ঘাটতি নেই। এতে সবাই ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশের স্বার্থে, সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে, আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে, সেটা অব্যাহত রাখতে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বতন্ত্র স্বতন্ত্রের জায়গায় আছে। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে আমি যদি চাপ দিয়ে নির্বাচন থেকে সরাতে চাই, সেটা কি নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে না? যেই জায়গায় জাপার প্রার্থী থাকবে, সেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী প্রত্যাহার করবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা তাদের সঙ্গে আলোচনা করব।
বিএনপি ও জামায়াতের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মানবাধিকার দিবসে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরির প্ল্যান নিয়ে এগোচ্ছে। জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে তারা এ বিশৃঙ্খলা করতে চায়।