হামলার ঘটনার দুদিন পরে মামলার প্রধান আসামি শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মেম্বারকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল শনিবার পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খালেদ উজ জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন।
গত শুক্রবার গভীর রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা থেকে স্বাধীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য। স্থানীয় লোকজন স্বাধীন মেম্বারকে যুবলীগের নেতা হিসেবে উল্লেখ করলেও সংগঠনটির জেলা কমিটির পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বলেন, ‘হামলার ঘটনার এজাহারনামীয় এক নম্বর আসামি অর্থাৎ মূল আসামির নাম হচ্ছে শহিদুল ইসলাম ওরফে স্বাধীন, উনি ইউনিয়নের মেম্বার। তাঁর নেতৃত্বে, তাঁর পরিকল্পনায় এক হাজার ৪০০ থেকে এক হাজার ৫০০ লোক ওই এলাকায় আক্রমণ করে। এটা আমরা জানি এবং নিশ্চিত হই। এবং পরে আমরা তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হই।’
‘সিলেট পিবিআইয়ের একটি বিশেষ টিম মৌলভীবাজার জেলা কুলাউড়া থানায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। কুলাউড়ার বামনবাজার ইউনিয়নের ঘোড়াবহী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হই। তাঁর পিতা হাজি কেরামত আলী, গ্রাম নাচনি’, যোগ করেন পুলিশ সুপার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শানে রিসালাত সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের সামনে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা। সেই সূত্র ধরে পাশের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের ঝুমন দাস আপন তাঁর ফেসবুকে মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন বলে দাবি করা হয়। একপর্যায়ে ঝুমনকে খুঁজে বের করে গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশে দেয় লোকজন। এরপরও লোকজন শান্ত না হয়ে গত বুধবার সকাল থেকে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নোয়াপাড়া গ্রাম ঘিরে রাখে। পরে তারা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিবপুর ইউপির চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে প্রথম মামলাটি করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় দিরাইয়ের সরমঙ্গল ইউপির সদস্য শহিদুল ইসলামকে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও দেড় হাজার জনকে আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে অপর মামলাটি করা হয়। পুলিশের করা মামলার বাদী হয়েছেন শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম। আজ রোববার সকাল পর্যন্ত শহিদুলসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩৩ জন।