অসহায় ও নিম্ন আয়ের রোজাদাররা রমজানের ইফতারের আমেজ থেকে যাতে বঞ্চিত না হয় তাই এই রমজানে ৬ হাজার মানুষের মাঝে ইফতার বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান।
প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও তিনি প্রথম রমজান থেকে কবিরহাট পৌরসভার জিরো পয়েন্টে অসহায়, ছিন্নমূল ও পরিবহন শ্রমিকদের মাঝে এ ইফতার বিতরণ শুরু করেন। নি¤œ আয়ের মানুষেরা যাতে ইফতারে ভাল খাবার খেতে পারে তাই মাসব্যাপী চলবে এই আয়োজন।
এছাড়া এই কর্মসূচীর আওতায় ধনী-গরিব নির্বিশেষে রাস্তাঘাটে চলাচলরত রোজাদার, পরিবহন শ্রমিক যেমন বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, অটোরিকশা ও সিএনজির যাত্রী এবং চালকরা বিনামূল্যে মাসব্যাপী এই ইফতার পাবে।
কবিরহাট পৌরসভার ২ নাম্বার ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন,গত কয়েক বছর ধরে রমজানের ইফতার আমি এখান থেকেই নিচ্ছি। মেয়রের দেওয়া খাবারেই আমি পরিবারের সবাইকে নিয়ে ইফতার করি।
বসুরহাট-সোনাপুর সড়কের সিএনজি চালক শাহ আলম জানান, আমি ১৫ বছর ধরে এই রোডে গাড়ী চালাই, আগে
সময়ের অভাবে ইফতারের সময়ে ইফতার করতে পারতাম না, অনেক সময় আমরা পানি পান করার মাধ্যমে ইফতার করতাম। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে দেখছি, কবিরহাট জিরো পয়েন্ট মোড়ে এলে ইফতারের প্যাকেট পাই। এটা দিয়েই আমরা ইফতার করি।
কবিরহাট পৌরসভার রিক্সাচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, সারা দিন পরিশ্রম করে ইফতার তৈরি করা সম্ভব হয় না। ৩০ রমজানের মধ্যে অধিকাংশ দিনই এখান থেকে ইফতারি নিয়ে যাই।
কবিরহাট উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইমাম হোসেন আজিম জানান,পৌর মেয়র ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ওনার এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ওনাকে দেখে সমাজের বিত্তবানরাও উৎসাহিত হবেন।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র জহিরুল হক রায়হান বলেন, প্রতিবছর আমার নিজ উদ্যোগে রোজাদারদের জন্য ইফতারের আয়োজন করি। এই বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইফতার মাহফিল না করার জন্য নিরুৎসাহিত করেছেন এবং ইফতার মাহফিলের পরিবর্তে গরীব দুঃখীদের মাঝে ইফতার বিতরন করার জন্য আহবান জানিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনায় মাসব্যাপি এই ইফতার বিতরন করা হচ্ছে।
আমাদের এখান থেকে কেউই খালি হাতে ফেরত যাচ্ছে না, যতজনই ইফতার নেওয়ার জন্য আসছে সবাইকেই ইফতার দেয়া হচ্ছে। একজন রোজাদারকে ইফতার দিতে পেরে নিজের মাঝে যে আনন্দ তৃপ্তি পাওয়া যায়, অন্য কিছু করে তা পাওয়া যায় না।
মেয়র আরও বলেন,প্রথম রমজানে আমরা ২০০ প্যাকেট দিয়ে শুরু করেছি। রমজান যত বাড়ে ততই প্যাকেটের পরিমাণও বাড়তেছে। যত বেশি চাহিদা হবে তত বেশি প্যাকেট আমরা দেব, যেন কোনো মানুষ খালি হাতে ফিরে না যায়। সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহŸান জানিয়ে মেয়র বলেন,আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস দেখে সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন, তাহলে অসহায়, হতদরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষ উপকৃত হবেন। এমনটা হলে আমার ইফতার দেওয়া শতভাগ সফল হবে এবং রোজায় বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের মানুষ অনাহারে ও কষ্টে দিন কাটাবে না।
ইফতার পরিবেশনের দায়িত্বে থাকা কবিরহাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আবদুল জলিল বলেন, ইফতারের প্রতিটি প্যাকেটে খেজুর, ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, জিলাপি, মুড়ি, পানি রয়েছে।
শুধু পরিবহন চালক-শ্রমিক নয়, আশপাশের মসজিদ, মাদ্রাসা তিনি ইফতার তুলে দেন। এ ছাড়া প্রতিদিন অসহায়,হতদরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষরা মেয়রের সহযোগিতায় উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ের সামনে বসেও ইফতার করেন।