রমজান মাসের বিশেষ ইবাদত হলো তারাবির নামাজ। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে তারাবি নামাজ পড়বে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে’। (বুখারি, হাদিস: ৩৬)
উল্লেখ্য, রমজানের চাঁদ দেখা গেলে রোজার আগেই তারাবি নামাজ আদায় করা রমজানের সুন্নত। এমনকি যারা শরিয়তসম্মত কোনো গ্রহণযোগ্য ওজরের কারণে রোজা পালনে অক্ষম, তারাও সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে তারাবি নামাজ পড়বেন।
তারাবির নামাজে রুকু পর্যন্ত বসে থাকা, শরিয়ত কী বলে?
তারাবির নামাজ শুরু হওয়ার পর জামাতে উপস্থিত থাকার পরও বসে থেকে রুকু পর্যন্ত অপেক্ষা করা নামাজে অলসতা ও উদাসীনতার লক্ষণ। কোনো ওজর না থাকলে এ রকম কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।
কারো অসুস্থতা বা দুর্বলতা থাকলে বসেও নামাজ আদায় করতে পারে। তারাবির মতো নফল নামাজগুলো কোনো ওজর বা অসুবিধা ছাড়াও বসে আদায় করা জায়েজ। নফল নামাজ দাঁড়িয়ে কিছু অংশ আদায় করার পর কিছু অংশ বসে আদায় করা যায়। আবার বসে শুরু করার পরও কিছু অংশ দাঁড়িয়ে আদায় করা যায়।
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বার্ধক্যে পৌঁছা পর্যন্ত কখনো তাকে রাতের নফল নামাজ বসে আদায় করতে দেখেননি। বার্ধক্যে পৌঁছার পর তিনি নফল নামাজে বসে কেরাত পাঠ করতেন, রুকুতে যাওয়ার সময় হলে দাঁড়িয়ে ত্রিশ অথবা চল্লিশ আয়াত তেলাওয়াত করে রুকুতে যেতেন। (সহিহ বুখারি: ১১১৮, সহিহ মুসলিম: ৭৩১)
তাই তারাবি পড়তে পড়তে ক্লান্তিবোধ করলে কিছুক্ষণ বসেও নামাজ পড়া যেতে পারে। কিন্তু নামাজে শরিক না হয়ে বসে থাকা উচিত নয়।
মনে রাখা উচিত যে, ওজর ছাড়া বসে নামাজ আদায় করলে দাঁড়িয়ে আদায়কৃত নামাজের অর্ধেক সওয়াব পাওয়া যায়। ইমরান ইবনে হোসাইন (রা.) বলেন, আমি রাসূল (সা.)-কে বসে নামাজ আদায় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,
إن صلى قائماً فهو أفضل ومن صلى قاعداً فله نصف أجر القائ
অর্থ: ‘যদি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তবে তাই উত্তম। আর বসে নামাজ আদায় করলে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়কারীর অর্ধেক সওয়াব পাওয়া যাবে’। (সহিহ বুখারি: ১১১৫)