এনবি নিউজ : মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ শাসক দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে আজ সোমবার ভোরের দিকে দেশটির সেনাবাহিনী আটক করেছে। ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দলের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘নির্বাচনে জালিয়াতি’ হওয়ার জেরে সুচিসহ অন্যদের আটক করা হয়েছে। সেনাবাহিনী-নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে এক বিবৃতির মাধ্যমে এই বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্রকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তোলে। বিতর্কিত ওই নির্বাচন নিয়ে সামরিক বাহিনীর অভিযোগের পর থেকে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। এর মধ্যেই সুচিসহ ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাদের আটক করা হলো।
অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন এনএলডি নভেম্বরের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পায়। সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধী জোট নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তোলে। তাদের দাবি, নির্বাচনে ভোটার তালিকায় ৮৬ লাখ গরমিল পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনী নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে আজ সোমবার বসতে যাওয়া পার্লামেন্ট অধিবেশন বাতিলের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু, অধিবেশন শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গেছে।
মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় সৈন্যরা নেমে পড়েছে। এ ছাড়া রাজধানী নেপিদোয় টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম এমআরটিভি জানিয়েছে, তারা কিছু কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েছে এবং তাদের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাপক মাত্রায় ব্যাহত হওয়ার কথা জানিয়েছে নেটব্লকস।
এনএলডির মুখপাত্র মিও নিয়ান্টের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট এবং অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের আজ সোমবার ভোরে আটক করা হয়েছে।
মিও নিয়ান্ট বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ফোনে বলেছেন, ‘আমি আমাদের জনগণকে বেপরোয়া কিছু না করার অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি তাদের আইন মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।’ নিয়ান্ট আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, তিনিও যে কোনো সময় আটক হতে পারেন।
সেনাবাহিনী সমর্থিত বিরোধী জোট গত নভেম্বরের নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তোলে। তাদের দাবি, নির্বাচনে ভোটার তালিকায় ৮৬ লাখ গরমিল পাওয়া গেছে।
নির্বাচনে এনএলডি পার্টি ৮৩ শতাংশ আসন পায়। ২০১১ সালে সামরিক শাসন শেষ হওয়ার পর এটি দ্বিতীয় নির্বাচন ছিল। তবে সামরিক বাহিনী নির্বাচনের ফলকে বাধাগ্রস্ত করে। তারা সুপ্রিম কোর্টে প্রেসিডেন্ট ও ইলেকটোরাল কমিশনের প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে।