এনবি নিউজ : বিএনপিকে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপ্রসূত মিথ্যাচার বাদ দিয়ে করোনায় অসহায় ও আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি আজ সকালে নিজ বাসভবনে ব্রিফিংকালে এ আহ্বান জানান।
‘করোনা সংকটে সরকার কিছুই করছে না, বিএনপিই জনগণের সঙ্গে রয়েছে’—বিএনপির মহাসচিবের এমন বক্তব্যকে ‘আজগুবি ও কাল্পনিক’ বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটা তাদের অক্ষমতা আর ব্যর্থতা আড়াল করার অপপ্রয়াস।’
‘বিএনপি করোনা সংকটে জনগণের পাশে আছে—এ কথা পাগলেও বিশ্বাস করে না, বলেন ওবায়দুল কাদের।
‘বিএনপি গৃহকোণে আইসোলেশনে থেকে গোয়েবলসিয় কায়দায় বাক্য চর্চা করছে’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সংকট দেখলে বিএনপির নেতাদের শামুকের মতো খোলসের আড়ালে গুটিয়ে থাকা আর পলায়নপরতা জনগণের কাছে এখন স্পষ্ট।’
‘যারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচনের দিন ঘরে বসে থাকে, আর আন্দোলনের ডাক দিয়ে দরজা-জানালা বন্ধ করে পুলিশের গতিবিধি দেখে, তারা নাকি করোনাকালে জনমানুষের সঙ্গে রয়েছে। এ কথা এখন কেউই বিশ্বাস করে না’, বলেন ওবায়দুল কাদের।
‘সরকার করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি করছে’—বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ ‘হাস্যকর’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনার নমুনা পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন, ফলাফলসহ প্রতিটি বিষয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় এবং বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। এখানে তথ্য লুকানোর কোন সুযোগ নেই।
ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন করেন, ‘এসব তথ্য লুকিয়ে সরকারের কী লাভ?’
‘এই করোনাকালে বিএনপিকে হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘তারা করোনার সংকটকে দেখছে চোখ বন্ধ করে, অন্ধের হাতি দেখার মতো করে।’
গার্মেন্টস খুলে দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির মহাসচিবের মন্তব্য সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফখরুল সাহেব একদিকে শ্রমিকদের স্বার্থ নিয়ে কথা বলেন, অপরদিকে গার্মেন্টস খুলে দিলেও আবার বিরোধিতা করেন।’
সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, জীবন ও জীবিকার সঙ্গে সমন্বয় করে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সরকার সচেষ্ট।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ এবং কল্যাণ চিন্তা করেই সরকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
‘ভ্যাকসিন নিয়ে বর্তমানে কোনো সংকট নেই, অথচ একটি মহল ভ্যাকসিন সংকট আছে বলে আতঙ্ক তৈরির অপপ্রয়াস চালাচ্ছে’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই স্বার্থান্বেষী মহল সংকটে মানুষের মনোবল ভেঙে দেওয়ার অপচেষ্টা করছে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী একদিকে টিকাদান কার্যক্রম চলতে থাকবে, অন্যদিকে ভ্যাকসিন আসাও অব্যাহত থাকবে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, একসঙ্গে কয়েক কোটি ভ্যাকসিন জমিয়ে রেখে কার্যক্রম শুরু করার কথা যারা ভাবছেন, তারা সঠিক বলছেন না।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ভ্যাকসিন একদিকে আসতে থাকবে, পাশাপাশি ভ্যাকসিন প্রদানের কর্মসূচিও চলতে থাকবে। এ নিয়ে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, আগামী ৭ আগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে দেশব্যাপী গ্রাম পর্যায়ে গণটিকাদান কার্যক্রম, এ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে এরই মধ্যে সরকার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তিনি সংশ্লিষ্টদের ভ্যাকসিন প্রদানের প্রটোকল অনুসরণ করে ধৈর্যের সঙ্গে গ্রামের মানুষদের টিকা প্রদানের আহ্বান জানান।
এ ছাড়া ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্র থেকে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের টিকাদান কর্মসূচি সফল করতে প্রশাসনকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগ করোনার শুরু থেকে জনমানুষের পাশে রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, টিকাদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জনমানুষের পাশে থাকবে দলের নেতাকর্মীরা।