এনবি নিউজ : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার দ্বিতীয় দফা সাক্ষ্য গ্রহণের প্রথম দিন একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এ সময় মামলার বিষয়ে মিডিয়া ট্রায়াল থেকে সতর্ক থাকতে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রবিবার ৫ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ চলে। দিনব্যাপী আদালতে মোহাম্মদ আলী নামে মামলার ৩নং সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার মধ্যে শেষ হয়।
আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, ‘রবিবার সারাদিন মামলার ৩নং সাক্ষী মোহাম্মদ আলীর সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। আদালতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে ওই মামলা নিয়ে আদালতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলতে। যাতে কোনও মিডিয়া ট্রায়াল না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন আদালত।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘মামলার তৃতীয় সাক্ষী মোহাম্মদ আলীকে জেরা করার সময় তিনি যে কথাগুলো বলেছেন তা অস্পষ্ট এবং এতে গরমিল রয়েছে। তা আমরা আদালতে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে আদালত চান না ওই মামলার বিষয়গুলো মিডিয়ায় আসুক। তাই এ ব্যাপারে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের সতর্ক করে দিয়েছেন আদালত।’
এর আগে ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট টানা তিন দিন মামলার ১নং সাক্ষী ও বাদী শারমিন সাহরিয়া ফেরদৌস ও ২নং সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করেন আদালত।
সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশের কড়া নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকালে সাড়ে ৯টার দিকে বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এদিকে, এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এরপর মেজর সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেফতার করে র্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন র্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
এ টি