এনবি নিউজ : ভারতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে যৌন নিপীড়নে অভিযুক্ত রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়সহ অভিযুক্তদের দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া ভুক্তভোগী তরুণীকেও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
শুক্রবার (২৮ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নাগরিক অপরাধী হয়ে অন্য কোনো দেশে ধরা পড়লে বা আত্মগোপনে থাকলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ধাপে ধাপে যেসব প্রক্রিয়া থাকে সেগুলো শুরু করা হয়েছে। ভারতের কেরালায় যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি সব কিছুর ঊর্ধ্বে একটি জঘন্য অপরাধ হয়েছে। আশা করি, টিকটক হৃদয় ও তার সহযোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে অন্য সব অপরাধীর মতো বেগ পেতে হবে না।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জানান, পুলিশ সদর দফতর থেকে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের এনসিবি শাখার কর্মকর্তারা ভারতের দিল্লির এনসিবি শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ই-মেইলে যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
যৌন নিপীড়নের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশের সহযোগিতায় ভুক্তভোগীর বাবা নিজের মেয়েকে শনাক্ত করেন। এরপর ওই তরুণীর বাবা রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ২০-২২ বছরের একজন তরুণীকে বিবস্ত্র করে টিকটক হৃদয়সহ ৩-৪ জন যুবক যৌন নিপীড়ন করছে।
বিদেশে ধরা পড়া বাংলাদেশি একজন আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তবে ভারতে পালিয়ে থাকা কোনো আসামিকে দেশে ফিরিয়ে আনাটা বর্তমানে অনেক সহজ হয়েছে। এর আগে বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদকে খুব সহজে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে এবং আদালতের রায় কার্যকর করা হয়েছে। বাংলাদেশি তরুণীকে কেরালায় কয়েক তরুণ মিলে যে পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়েছে এক্ষেত্রেও অভিযুক্তদের দেশে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে বলে জানিয়েছেন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশ দিল্লি পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছে। সেই অনুযায়ী ব্যাংগালুরু পুলিশের সঙ্গেও তথ্য আদান প্রদান করছে দিল্লি পুলিশ। যৌন নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত গ্রেফতার আসামিরা এখন ব্যাংগালুরু পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। টিকটক হৃদয়সহ দুজন পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। সেখান থেকে কলকাতা পুলিশের মাধ্যমে বেনাপোল বর্ডার দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হবে। বর্তমানে হস্তান্তর প্রক্রিয়ার একেবারেই প্রাথমিক কথাবার্তা শুরু হয়েছে উভয় দেশের পুলিশের মধ্যে।
তবে এই শঙ্কা রয়েছে, শেষ পর্যন্ত ভারতের পুলিশ সেখানে ঘটা অপরাধীদের বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠাবে কিনা? কারণ তারা অনেকে অবৈধ হিসেবে ভারতে প্রবেশ করেছেন। অনেকের পাসপোর্টও নেই। পাসপোর্ট না থাকাদের অবৈধ হিসেবে সাজাও খাটা লাগতে পারে। সবমিলিয়ে আসামিদের ফেরত আনা দীর্ঘ প্রক্রিয়া লাগতে পারে। তবে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে প্রচেষ্টা চালালে আসামিদের ফিরিয়ে আনার কাজটি সহজ হবে।